সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে কে.পি. শর্মা বলেন, এই বিষয়ে দিল্লি থেকে খবর আসছে। সংবিধান সংশোধন করে দেশের নতুন মানচিত্র গ্রহণ করায় ভারতে এই বৈঠকগুলো আয়োজিত হচ্ছে।
এমন সময় নেপালের প্রধানমন্ত্রী তাকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের কথা তুললেন যখন তার পদত্যাগের দাবি নিজ দলের ভেতরেই জোরালো হচ্ছে। নেপালে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, কাঠমান্ডুতে এখন কমিউনিস্ট পার্টির যে স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক চলছে, সেখানে ওলি কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন এবং এই বৈঠকেই তার অপসারণের পথ প্রশস্ত হতে পারে। সাবেক মাওবাদী নেতা ও বর্তমানে নেপালের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির দলীয় প্রধান প্রচন্ড-ই (পুষ্প কুমার দহাল) এই বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
নেপালের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে দেশটির সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী ১৩ জুন সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এতে নতুন মানচিত্র গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে বিতর্কিত লিমপিয়াধুরা-কালাপানি-লিপুলেখ অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ভারত এই এলাকাগুলোকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে। ১৮ জুন বিলটিতে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট বিধবা ডেবি ভান্ডারি।
ওলি বলেন, নেপালের ভূখণ্ড চিহ্নিত করায় খুশি হয়নি ভারত। আমাদের জাতীয়তাবাদ এত দুর্বল নয়। আমরা আমাদের মানচিত্র পরিবর্তন করেছি এবং এখন যদি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে গদিচ্যুত করা হয় তাহলে নেপালের কাছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।
ভারতে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, কিছু মানুষ মনে করছে নেপালের নতুন মানচিত্র গ্রহণ করা অপরাধ। আপনারা হয়ত শুনেছেন ১৫ দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে বদলানো হতে পারে। এবার যদি আমাদের পদচ্যুত করা হয় তাহলে নেপালের স্বার্থের পক্ষে কথা বলার সাহস কেউ পারে। কারণ তাকেও দ্রুতই সরিয়ে দেওয়া হবে। আমি নিজের জন্য বলছি না। আমি দেশের জন্য বলছি। আমাদের দল, আমাদের সংসদীয় দল এমন ফাঁদে পা দেবে না। যারা চেষ্টা করছে, করুক।
উল্লেখ্য, নেপালের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি দুটি অংশ রয়েছে– সিপিএন-ইউএমএল ও মাওবাদী কেন্দ্র। প্রথমটির নেতৃত্বে ছিলেন কে পি ওলি আর দ্বিতীয়টির প্রচন্ড। ২৭৫ আসনের পার্লামেন্টে এই দলের এখন মোট ১৭৪ জন এমপি আছেন, এদের মধ্যে সিপিএন-ইউএমএলের ১২১ জন আর মাওবাদী কেন্দ্রের ৫৩ জন। আর এই দুই দলের সংযুক্তির মাধ্যমেই সভায় কমিউনিস্টেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত হয়েছিল। নেপালের দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট পত্রিকা’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহে স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে প্রচন্ড নাকি প্রধানমন্ত্রী ওলিকে সরাসরি হুমকি দিয়েছেন।