ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ডেকান হেরাল্ডের খবরে জানা যায়, গত সপ্তাহে ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলায় বার্ড ফ্লু শনাক্তের জেরে প্রায় ৪ হাজার হাঁস-মুরগি মেরে ফেলা হয়। এরপর রাজ্যের রাজধানী রনচিতেও এর সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
সংক্রমিত এলাকার এক কিলোমিটারের মধ্যে সব ধরনের পোষা পাখি মেরে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ১০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে থাকা এলাকাগুলোকে রাখা হয়েছে কড়া নজরদারিতে।
এ অবস্থায় রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (রিমস)-এর মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ডা. অশোক কুমার শর্মা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ভাইরাসটির প্রায় প্রতিটি ধরনই তাপমাত্রা সংবেদনশীল এটি সত্য। এতে আক্রান্ত মুরগি বা পাখি সঠিকভাবে রান্না করলে ভাইরাস মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে অন্য উপায়ে সেটি সংক্রমিত পাখি থেকে মানুষের মধ্যে পৌঁছাতে পারে।
খবরে বলা হয়েছে, ২০২০ সাল থেকে টানা তৃতীয় বছর ঝাড়খণ্ডে পাখির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলো। তবে যতবারই এ ধরনের খবর ছড়ায়, ততবারই স্থানীয় লোকজন হাঁস, মুরগি ও ডিম খাওয়া কমিয়ে দেয়। যদিও এই ভয়কে ‘ভিত্তিহীন’ হিসেবে বর্ণনা করা যেতে পারে, তবু এ ধরনের সতর্কতার প্রশংসা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
রিমসের প্রিভেন্টিভ সোশ্যাল মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. দেবেশ বলেছেন, মানুষকে আক্রান্ত করা বেশ কয়েকটি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস অন্য প্রাণীর দেহ থেকে এসেছে।
তিনি বলেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসগুলোর ‘ড্রিফট অ্যান্ড শিফট’ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। অর্থাৎ, তারা সহজেই পরিবর্তিত হয়। তবে এসব ভাইরাস ঠিক কখন পরিবর্তিত হয় এবং মানুষকে প্রভাবিত করতে শুরু করে তা কেউ জানে না।
ডা. অশোক কুমার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ভাইরাসটির প্যাথোজেনোসিটি খুব বেশি এবং প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়, এটি খামারে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে গণহারে পাখি হত্যা করে। তার মতে, এই মুহূর্তে পোল্ট্রিগুলোর মধ্যে ভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা ও এটি মানুষকে সংক্রমিত করা আটকানোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
অশোক বলেন, পাখিগুলো মেরে ফেলার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যারা এই কাজটি করবেন, তাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ, ভাইরাসগুলো খুব বেশি সক্রিয়।
তিনি বলেন, হাঁস-মুরগি পরিষ্কার ও রান্নার সময়ও একই সতর্কতা প্রযোজ্য। যারা মাংস পরিষ্কার বা রান্না করেন, তারা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। যদিও রান্না করার পরে ভাইরাসটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
অর্থসংবাদ/এসএম