হোয়াং-অড শৈশবে তার বাবার কাছ থেকে ট্যাটু আঁকা শিখেছিলেন। এর পর থেকেই হাত দিয়েই নিখুঁত সব ডিজাইনে ট্যাটু এঁকে যাচ্ছেন তিনি।
হোয়াং-অড স্থানীয়দের মাঝে মারিয়া অজ্ঞে নামেও পরিচিত। ফিলিপাইনের কালিঙ্গ প্রদেশের পাহাড়ি গ্রাম বুসকালানের বাসিন্দা তিনি। রাজধানী ম্যানিলা থেকে উত্তরে অবস্থিত দুর্গম এ এলাকাটিতে যেতে প্রায় ১৫ ঘণ্টা সময় লাগে।
বাঁশের কঞ্চি, পমেলো গাছের কাঁটা, পানি ও কয়লার সাহায্যে হোয়াং-অড ট্যাটু আঁকেন। নিজের শরীরজুড়েও করেছেন নিখুঁত সব ট্যাটু। মূলত আদিবাসী বুট বুট যোদ্ধাদের কাছ থেকে ঐতিহাসিকভাবে শরীরে ট্যাটু করার এ প্রথাটি এসেছে।
কালিঙ্গ প্রদেশের অঞ্চলটিতে ট্যাটুশিল্পীদের স্থানীয় ভাষায় বলা হয় 'ম্যামবাবাটক'। বর্তমানে প্রদেশটিতে জীবিত ম্যামবাবাটকদের মধ্যে হোয়াং-অডই সবচেয়ে বয়স্ক।
দেশটিতে ঘুরতে আসা বহু পর্যটক হোয়াং-অডের হাতে ট্যাটু করাতে বুসকালান গ্রামে আসেন। এ শিল্পী সম্পর্কে 'ভোগ ফিলিপাইন' সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলে, হাত দিয়ে ট্যাটু আঁকার মধ্য দিয়ে কালিঙ্গ আদিবাসীর শক্তি, সাহস ও সৌন্দর্যের বিষয়টি ফুটিয়ে তুলেছেন হোয়াং-অড।
হোয়াং-অডের বংশপরম্পরায় ট্যাটু আঁকার চর্চা চলে আসছে। এ শিল্পী যেমন তার বাবার কাছ থেকে দীক্ষা লাভ করেছেন, ঠিক তেমনি কয়েক বছর ধরে তার দুই নাতনিকে ট্যাটু আঁকা শেখাচ্ছেন।
২০১৭ সালে সিএনএন ট্রাভেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হোয়াং-অড বলেন, আমার বয়সের ট্যাটুশিল্পীরা কেউ আর জীবিত নেই। আমার প্রজন্মের একমাত্র আমিই এখনো বেঁচে আছি, ট্যাটু আঁকছি। আমার অনুপস্থিতিতে ভবিষ্যতেও হাত দিয়ে ট্যাটু আঁকার এই চর্চা থাকবে। কেননা আমি পরবর্তী প্রজন্মকে শিখিয়ে যাচ্ছি।
১০৬ বছর বয়সি এ শিল্পী আরও বলেন, যতদিন মানুষ এখানে ট্যাটু আঁকতে আসবে, ততদিনই আমাদের এ ঐতিহ্যটি টিকে থাকবে। আমার দৃষ্টিশক্তি যতদিন থাকবে, আমি ট্যাটু এঁকে যাব। দৃষ্টিশক্তি কমে গেলে ট্যাটু আঁকা বন্ধ করে দেব।
অন্যদিকে 'ভোগ ফিলিপাইন' ম্যাগাজিনের চিফ এডিটর বিয়া ভালদেস বলেন, পাবলিকেশনের সকল কর্মকর্তা সর্বসম্মতভাবে হোয়াং-অডকে প্রচ্ছদের মডেল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেননা তিনি আমাদের ফিলিপিনো সংস্কৃতিকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলছেন।
প্রবীণতম ব্যক্তি হিসেবে ভোগ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে মডেল হওয়ার রেকর্ডটি এতদিন ছিল অভিনেত্রী জুডি ডেঞ্চের দখলে। তিনি ২০২০ সালে ৮৫ বছর বয়সে ব্রিটিশ ভোগ প্রচ্ছদে জায়গা করে নিয়েছিলেন।
অর্থসংবাদ/এসএস