জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সীমিত হচ্ছে চ্যাটজিপিটির ব্যবহার

জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সীমিত হচ্ছে চ্যাটজিপিটির ব্যবহার
জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। চ্যাটজিপিটি মাইক্রোসফ্ট সমর্থিত একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অ্যাপ্লিকেশন, যা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে স্বাভাবিক বাক্য তৈরি করে। দেশটিতে চ্যাটজিপিটির ব্যবহার ক্রমবর্ধমানভাবে শিক্ষার্থীদের প্রবন্ধ এবং অন্যান্য কাগজপত্রের জন্য সীমাবদ্ধ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের তথ্য ফাঁসের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, শিক্ষকদেরও এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

টোকিওর সোফিয়া ইউনিভার্সিটি গত ২৭ মার্চ তাদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ছাত্র ও শিক্ষকদের জন্য চ্যাটজিপিটি এবং অন্যান্য এআইচালিত চ্যাটবট সম্পর্কিত গ্রেডিং নীতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষকদের অনুমতি ছাড়া যেকোনো অ্যাসাইনমেন্টে চ্যাটজিপিটি এবং অন্যান্য এআইচালিত চ্যাটবট থেকে পাওয়া লেখা, প্রগ্রামের সোর্স কোড এবং গণনার ফলাফলের ব্যবহার অনুমোদিত নয়। যদি কেউ এটি না মানে এবং তা শনাক্ত করা যায়, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত নভেম্বরে ওপেনএআই চ্যাটজিপিটি বিনা মূল্যে প্রকাশ করে। এতে মাইক্রোসফ্ট বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ বিনিয়োগ করেছে। ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাপী এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। যদিও চ্যাটজিপিটি একটি উচ্চ স্তরের সুবিধা প্রদান করে। তবে যেসব ক্ষেত্রে এআইয়ের বিস্তৃত জ্ঞান নেই সেখানে এটি ভুল উত্তর দিতে পারে। কপিরাইট লঙ্ঘনের আশঙ্কাও রয়েছে। এ ছাড়াও গবেষণা এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে গোপনীয় তথ্য এআই কম্পানির হাতে চলে যেতে পারে। ফলে বাইরের পক্ষের কাছে এ ধরনের তথ্য ফাঁস হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের এআই ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয়। তাই জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রাথমিকভাবে প্রবন্ধ তৈরির সময় এর ব্যবহার সীমিত করেছে এবং সতর্কতা জারি করেছে।

টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় গত ৩ এপ্রিল তার অভ্যন্তরীণ ওয়েবসাইটে ‘উৎপাদনক্ষম এআই’ শিরোনামে একটি নথি পোস্ট করেছে। সেখানে অন্যান্য প্রভাব বিস্তারকারী এআইয়ের বিষয়েও উল্লেখ করা হয়েছে। নথিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্রতিবেদনগুলো অবশ্যই শিক্ষার্থীদের নিজেদেরই তৈরি করতে হবে এবং শুধু এআইয়ের সাহায্যে তৈরি করা যাবে না।’

এ ছাড়াও শুক্রবার কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি নাগাহিরো মিনাতো জানান, এআই দিয়ে তৈরি কাগজপত্রে অনেক সমস্যা রয়েছে। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘লেখার জন্য প্রচুর উদ্যমের প্রয়োজন। তবে এটি আপনার মানসিকতা এবং আপনার চিন্তা করার ক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে।’ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষকসহ সব অনুষদ সদস্যদের এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।

তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয় তাদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ‘উৎপাদনক্ষম এআই’ ব্যবহার করার বিষয়ে একটি নোটিশ পোস্ট করেছে। কিভাবে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয় এবং কিভাবে পরীক্ষা পরিচালনা করা হয় তা পুনর্বিবেচনা করার জন্য নোটিশে শিক্ষকদের অনুরোধ করা হয়েছে।

সুকুবা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ নিয়োগপ্রাপ্ত অধ্যাপক এবং উচ্চ শিক্ষায় বিশেষজ্ঞ ডা. মোতোহিসা কানেকো বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের তাদের লেখায় উৎপাদনক্ষম এআই ব্যবহার করতে নিষেধ করার মাধ্যমে এটি নিশ্চিত করা কঠিন যে তারা সত্যিই এটি ব্যবহার করছে না। শিক্ষার্থীদের প্রতিবেদন জমা দেওয়া এবং তাদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার মতো ব্যবস্থাগুলো ব্যবহার করে শিক্ষকদের আরো সৃজনশীল হতে হবে।’

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া