মে মাসে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর

মে মাসে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর
মে মাসে মন্থর হয়ে পড়েছে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। শিল্পোৎপাদন ও পাইকারি বিক্রি ছিল প্রত্যাশার চেয়ে কম। চলতি সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রদেয় ঋণে সুদহার কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু মহামারী-পরবর্তী পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে গতিশীল করতে বেইজিংকে আরো পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর রয়টার্স।

ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকস জানিয়েছে, চীনা অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকেই গতি হারিয়ে ফেলে। শিল্পোৎপাদন মে মাসে বছরওয়ারি ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু এপ্রিলের তুলনায় এ হার কম, এপ্রিলে উৎপাদন বেড়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। মে মাসে রয়টার্সের প্রাক্কলন অনুযায়ী, উৎপাদনের হার ছিল ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। দেশের অভ্যন্তরে ও বিদেশে চাহিদা কমে যাওয়ায় উৎপাদন প্রতিষ্ঠান হিমশিম খাচ্ছে। মে মাসে পাইকারি বিক্রয় ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়ার পূর্বাভাস থাকলেও বেড়েছে ১২ দশমিক ৭ শতাংশ। এপ্রিলে পাইকারি বিক্রয় ছিল ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ। পিনপয়েন্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রেসিডেন্ট চিওয়েই চাং দাবি করেছেন, উপাত্ত পর্যালোচনা করে কেবল বোঝা যায়, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়ছে। কারখানার কার্যক্রম, ব্যবসায়িক গতিশীলতা, ঋণ বৃদ্ধি ও বাড়ি বিক্রির পরিসংখ্যানে পুনরুদ্ধার সূচক নিম্নমুখী থাকার ছাপ স্পষ্ট। অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন বছরওয়ারি ও মাসওয়ারি বেড়েছে। যদিও এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে কমেছে কয়লা উত্তোলন।

গত বছরে অধিকাংশ শহর ছিল কার্যত মহামারীর কারণে স্থবির। লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা তখন প্রবল ছিল। ফলে সে সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি বিবেচনা নিলে তা যথেষ্ট কম। সূচকের অবস্থান নীতিনির্ধারকদের সামনে ব্যবসায়িক পরিস্থিতি উন্মোচিত করে দেয়। সরকারের জন্য ঝুঁকি, তরুণদের জন্য বেকারত্ব ও বৈশ্বিক চাহিদা কমে যাওয়া সার্বিকভাবে অর্থনীতির জন্য নেতিবাচক। আবাসন সংস্থা জোনস ল্যাং লাসেইলের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ব্রুস ফেং বলেছেন, অভ্যন্তরীণ চাহিদা যথেষ্ট নয়। বিদেশী চাহিদাও সামান্য বলে আগামী মাসগুলোয় এমন প্রবণতা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন এ মুহূর্তে। কিন্তু মন্থর হওয়া অর্থনীতিকে পুরোপুরি পুনরুদ্ধারে তিন বছর পর্যন্ত সময়ের প্রয়োজন।

চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১০ মাস পর প্রথমবার এক বছর মেয়াদি ঋণে সুদহার কমিয়েছে। রয়েছে আরো কমানোর পরিকল্পনা। সুদহার কমানোর পর গতি বেড়েছে স্টক মার্কেটে। সিএসআই ৩০০ সূচকে শেয়ার বেড়েছে দশমিক ৬ শতাংশ ও হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচকে বেড়েছে ১ দশমিক ২ শতাংশ। ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের চীন প্রধান জুলিয়ান ইভান-প্রিচার্ড দাবি করেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্রেফ সুদহার হ্রাস খুব বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে না। চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ। অর্থনীতির সূচক আরো নিচে নামার আগে দ্রুত সহযোগিতার হার বাড়াতে হবে।

২০০১ সালের পর মে মাসে স্থাবর সম্পত্তি খাতে সূচক সবচেয়ে দ্রুত অবনমিত হয়েছে। বছরওয়ারি অবনমন ছিল ২১ দশমিক ৫ শতাংশ। একই সময়ে বেড়েছে নতুন বাড়ির দাম। প্রথম পাঁচ মাসে বেসরকারি সম্পত্তিতে বিনিয়োগ সংকুচিত হয়েছে দশমিক ১ শতাংশ। যদিও সরকারি খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। শ্রমবাজারের পরিস্থিতিও অনুকূলে নেই। বেকার সমস্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবেলায় সতর্ক অবস্থানেই বেইজিং।

অর্থসংবাদ/এসএম

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া