কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের উপকূলে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে তিন হাজার ৮০০ মিটার নিচে যাওয়ার পর রবিবার পাঁচজন যাত্রীসহ ডুবোযানটি নিখোঁজ হয়। ডুবোযানে এখন ৩০ ঘণ্টারও কম অক্সিজেন বাকি আছে বলে ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ। সাগরে ডুব দেওয়ার পর প্রায় ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে ছোট এই ডুবোযানটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এদিকে তৃতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান রাতভর অব্যাহত রাখা হয়েছে।
মার্কিন কোস্ট গার্ড কমান্ডাররা বিশাল সমুদ্রে (প্রায় ২০ হাজার বর্গকিমি এলাকা জুড়ে) জটিল অনুসন্ধান অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কানাডার নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং উপকূলরক্ষীদের উদ্ধারকারী দল, সেই সঙ্গে নিউ ইয়র্ক এয়ার ন্যাশনাল গার্ড সহায়তা করছে। এ ছাড়া একটি ফরাসি গবেষণা জাহাজও অনুসন্ধানে যোগ দিয়েছে।
টাইটান ডুবোযানের অবস্থান নিউফাউন্ডল্যান্ডের রাজধানী সেন্ট জনস থেকে প্রায় ৯০০ মাইল (১৪৫০ কিমি) পূর্ব এবং ৪০০ মাইল (৬৪৩ কিমি) দক্ষিণে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইউএস কোস্ট গার্ডের অনুমান অনুযায়ী, টাইটান জাহাজে মাত্র ৩০ ঘণ্টার অক্সিজেন অবশিষ্ট রয়েছে। ট্যুর ফার্ম ‘ওশানগেট’ জানিয়েছে, ডুবোযানে থাকা পাঁচজনকে উদ্ধারের জন্য সব বিকল্প পথ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। ডুবোযানটি ‘ওশানগেট’ কম্পানির ‘টাইটান সাবমার্সিবল’ বলে জানা গেছে। ডুবোযানটিতে রয়েছেন ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ এবং তার ছেলে সুলেমান, ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ও অভিযাত্রী হামিশ হার্ডিং।
এ ছাড়া রয়েছেন পল হেনরি নারজিওলেট, যিনি একজন প্রাক্তন ফরাসি নৌবাহিনীর ডুবুরি।
মার্কিন কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, উদ্ধার অভিযানটি ‘খুব জটিল’। এলাকাটি বেশ দূরে হওয়ায় উদ্ধার অভিযান কঠিন করে তুলেছে। এর আগে সোমবার বিকেলে মার্কিন কোস্ট গার্ডের রিয়ার অ্যাডএম জন মাগার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘আমরা ধারণা করছি আমাদের হাতে ৭০ (অক্সিজেন) ঘণ্টা এবং সর্বমোট ৯৬ ঘণ্টা সময় আছে।’
তিনি আরো বলেছিলেন, উদ্ধারকারী দলগুলো খুব গুরুত্ব দিয়েই বিষয়টি দেখছে এবং সাবমেরিনে থাকা মানুষগুলোকে নিরাপদে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ সেন্ট জনস নিউফাউন্ডল্যান্ডের প্রায় ৪৩৫ মাইল (৭০০ কিমি) দক্ষিণে অবস্থিত। যদিও উদ্ধার অভিযান বোস্টন, ম্যাসাচুসেটস থেকে চালানো হচ্ছে। এটি একটি ট্রাক আকারের ডুবোযান, যাতে পাঁচজন যাত্রী ভ্রমণ করতে পারে এবং সাধারণত চার দিনের জন্য জরুরি অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা থাকে।
সাবমার্সিবলটির (ডুবোযান) ওজন ২৩ হাজার পাউন্ড (১০,৪৩২ কেজি) এবং ওয়েবসাইট অনুসারে, ১৩ হাজার ১০০ ফুট পর্যন্ত গভীরতায় পৌঁছতে পারে এবং পাঁচজন ক্রুর জন্য ৯৬ ঘণ্টা লাইফ সাপোর্ট দিতে পারে। তিন হাজার ৮০০ মিটার (১২,৫০০ ফুট) গভীরে গিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসস্তূপ দেখতে গুনতে হয় দুই লাখ ৫০ হাজার ডলার।
সূত্র : বিবিসি