পশু কোরবানির পর যা করবেন
১. শহর বা গ্রামে কোনো একটি এলাকার লোকজন বিচ্ছিন্নভাবে কোরবানি না দিয়ে বেশ কয়েকজন মিলে একই স্থানে কোরবানি করা ভালো।
২. পশু কোরবানির জায়গাটি যেন খোলামেলা হয়। গ্রামে গর্ত করা যায় এমন জায়গা, আর শহরে রাস্তার কাছাকাছি হলে বর্জ্যের গাড়ি পৌঁছানো সহজ হবে।
৩. পশু কোরবানির পর রক্ত ঝরা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। যদি রক্ত মাটি থেকে সরানো সম্ভব না হয়। তাহলে পর্যাপ্ত পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এ সময় জীবাণুনাশকও ব্যবহার করতে হবে।
৪. গর্তের মধ্যে কিছু চুন বা ব্লিচিং পাউডার বা জীবাণুনাশক, যেমন- ফাম-৩০ ইত্যাদি দেওয়া। যাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায় এবং শেয়াল বা কুকুর মাটি খুঁড়ে রক্ত ছড়াতে বা খেতে না পারে।
৫. পশুর দেহ থেকে নাড়ি-ভুঁড়ির উচ্ছিষ্ট বের করে যেখানে-সেখানে ফেলে দিলে তা পচে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়াবে এবং পরিবেশ দূষিত হয়ে বিভিন্ন রোগ ছড়াবে। তাই বিষয়টি আগেই মাথায় রাখতে হবে।
৬. জবেহ পর্ব শেষে রক্তের মতো শরীরের যাবতীয় উচ্ছিষ্ট এক করে মাটিতে তিন বা চার ফুট গর্ত করে তার ওপর চুন, ব্লিচিং পাউডার বা ফাম-৩০ নামক জীবাণুনাশক স্প্রে করে তার ওপর কাঁটাজাতীয় কিছু ডালপালা এবং খড়কুটা দিয়ে ঢেকে শক্ত করে মাটিচাপা দিতে হবে।
৭. মাটিচাপার ওপরে কিছু মোটা তুষ ছিটিয়ে দিলে শেয়াল বা কুকুর মাটি গর্ত করে ময়লা তুলতে পারবে না। মূল কথা হচ্ছে, কোরবানির পশুর বর্জ্য নিজের উদ্যোগে পরিষ্কার করাই ভালো।
৮. শহর হলে পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য সংগ্রহের গাড়ির শরণাপন্ন হতে হবে। ময়লা গাড়িতে উঠিয়ে জবেহ করার স্থান পর্যাপ্ত পানি ও জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
৯. ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে পশু জবেহ করলে প্রথমেই রক্ত ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর মাংস সংগ্রহ করা হয়ে গেলে গাড়িতে আবর্জনা তুলে দিয়ে পুনরায় ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
১০. মনে রাখতে হবে, পশুর রক্ত ও তরল বর্জ্য খোলা স্থানে রাখা যাবে না। এগুলো গর্তের ভেতরে পুঁতে মাটিচাপা দিতে হবে অথবা পরিচ্ছন্নতা কাজে নিয়োজিত গাড়িতে দিতে হবে। কারণ রক্ত আর নাড়ি-ভুঁড়ি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুর্গন্ধ ছড়ায়।
কোরবানির পর আমাদের সচেতনতাই পারে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ স্বাস্থ্যকর হিসেবে বজায় রাখতে। পাশাপাশি আমরা যেন শুধু পশু কোরবানির মাধ্যমেই ‘ত্যাগ’ শব্দটি সীমাবদ্ধ না রাখি। আমাদের ত্যাগ যেন সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের প্রতীক হয়—সেদিকেও আমরা নজর রাখবো।