সম্প্রতি ফেডারেল রিজার্ভ ইকোনমিক সিম্পোজিয়ামে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
মার্কিন-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ, এরপর করোনাভাইরাস মহামারি ও ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর অনেকেই ভেবেছিলেন, বিশ্বায়নের প্রক্রিয়া বোধ হয় থমকে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এখনো বৈশ্বিক জিডিপির ৬০ শতাংশ বাণিজ্য থেকেই আসছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের এক সম্মেলনে হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের লরা আলফারো ও ডার্টমাউথের টাক স্কুল অব বিজনেসের সহযোগী অধ্যাপক ডেভিন চর নিজেদের গবেষণাপত্রে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।
তবে কিছু পরিবর্তন এর মধ্যে ঘটে গেছে। সেটা হলো, চীনের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক। সম্প্রতি বাস্তবায়িত যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পনীতি ও মহামারির কারণে এই ‘মহাস্থানান্তর’ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি পণ্য নেওয়া কমেছে—২০১৬ সালে যা ছিল ২১ দশমিক ৬ শতাংশ, ২০২২ সালে তা ১৬ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
তবে এই পরিবর্তনের প্রভাব কী, তা এখনো পরিষ্কার নয়। গবেষকেরা জানিয়েছেন, চীন থেকে উৎপাদনপ্রক্রিয়া সরিয়ে আনার কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত উৎপাদনপ্রক্রিয়ার কারণে যে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যাচ্ছে, বিষয়টি তেমন নয়।
আবার চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি পণ্য নেওয়া কমে যাওয়ার মানেই যে বিশ্বের এই দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তির বিচ্ছেদ ঘটছে, তা–ও নয়।
ব্যবসা-বাণিজ্য স্থানান্তরের কারণে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে ভিয়েতনাম ও মেক্সিকো। এ ছাড়া অন্যান্য দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বল্প প্রক্রিয়াজাত পণ্য কেনার ঘটনা থেকে বোঝা যায়, উৎপাদনপ্রক্রিয়া কিছুটা হলেও স্থানান্তরিত হয়েছে।
অন্যদিকে, কোম্পানিগুলোর ভাষ্য হচ্ছে, সরবরাহব্যবস্থা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়লে ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাহত হতে পারে, বিশেষ করে মহামারি, চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া ও শুল্কের মতো নীতিগত প্রভাব মোকাবিলা করা কঠিন।
এ বাস্তবতায় গবেষকেরা দেখেছেন, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে চীন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, এই তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বা যোগ থেকে যাবে।
গবেষকেরা বলেন, ফেডারেল রিজার্ভ যেভাবে নীতি সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলার চেষ্টা করছে, সেই বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই শিল্পনীতির অভিঘাতে দেশটির শ্রমিকদের মজুরি ও ব্যবসায়িক খরচ বাড়বে।
অর্থসংবাদ/এমআই