ইইউভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে এলএনজির মূল প্রবেশদ্বার হচ্ছে স্পেন ও বেলজিয়াম। বর্তমানে চীনের পর রাশিয়ার এলএনজির দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম গ্রাহক হচ্ছে এই দুটি দেশ। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
দুর্নীতিবিরোধী গোষ্ঠী গ্লোবাল উইটনেসের জ্যেষ্ঠ জীবাশ্ম জ্বালানি বিশ্লেষক জোনাথন গ্যান্ট দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, রাশিয়ার এলএনজির সিংহভাগ কিনছে ইইউভুক্ত দেশগুলো। ফলে এলএনজি হয়ে উঠেছে দেশটির রাজস্ব আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
গত বছর রাশিয়ার ইউক্রেন হামলার পর ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি কমিয়ে দেয়। ফলে পাইপলাইনে রাশিয়া থেকে ইউরোপে তেল-গ্যাস সরবরাহ দৃশ্যমানভাবে কমে যায়। সেই ঘাটতি পূরণে ইউরোপীয় দেশগুলো এলএনজি আমদানিতে ঝুঁকে পড়ে।
গ্লোবাল উইটনেসের তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের মধ্যে ২২ মিলিয়ন কিউবিক মিটার রুশ এলএনজি কিনেছে ইইউ দেশগুলো; ২০২১ সালের একই সময়ে যা ছিল ১৫ মিলিয়ন কিউবিক মিটার।
গ্যান্ট আরও বলেন, রাশিয়ার গ্যাস কেনা যে কথা, তেল কেনাও একই কথা। এই মুনাফা দিয়ে ইউক্রেনের যুদ্ধে অর্থায়ন করে রাশিয়া আর এই মুনাফা মানে আরও বেশি রক্তপাত। একদিকে ইউরোপীয় দেশগুলো এই যুদ্ধের নিন্দা করছে, অন্যদিকে তারা পুতিনের পকেট ভারী করছে। দেশগুলোর উচিত, কথার সঙ্গে কাজের মিল রাখা; তা না হলে যুদ্ধ যেমন চলতে থাকবে, তেমনি জলবায়ুরও বারোটা বাজবে।
যদিও স্পেন ও বেলজিয়াম বলছে, এই পরিসংখ্যান তাদের নিজেদের তেল কেনার নয়; বরং তাদের বন্দর ব্যবহার করে ইইউর দেশগুলো এলএনজি কিনছে।
বেলজিয়ামের জিব্রুগ ও আন্তের্প বন্দর দুটি ফ্রান্স ও জার্মানিসহ ১৮টি বাজারের প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে। এই বন্দরের বেশির ভাগ এলএনজি রপ্তানি করা হয় প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বেলজিয়ামের মাত্র ২ দশমিক ৮ শতাংশ গ্যাস আসে রাশিয়া থেকে।
ইইউর নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ২০২২ সালে ইউরোপের নেতারা রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে ও বিকল্প সরবরাহব্যবস্থা তৈরির চেষ্টা করেছেন।
ইইউর জ্বালানি কমিশনার কাদরি সিমসন দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ইউরোপের উচিত হবে, তাড়াতাড়ি রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমানো; এটা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
অর্থসংবাদ/এমআই