আগস্টে বৈশ্বিক বাণিজ্যে ধীরগতি

আগস্টে বৈশ্বিক বাণিজ্যে ধীরগতি
বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। তাতে ভোগপণ্যের দাম অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় মানুষ সংকুচিত করেছে। সাথে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও ঋণব্যয়ের চাপে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। ইউরোজোন ও এশিয়ার বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে কেবল জাপানই পরিষেবা খাতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখিয়েছে। খবর রয়টার্স।

ইউরোজোনের চিত্র ছিল পূর্বাভাসের চেয়েও নেতিবাচক। ব্লকটির পরিষেবা খাত বিপজ্জনক সীমা পার করছে বর্তমানে। বিশেষজ্ঞরা আগামী দিনগুলোয় মন্দার আশঙ্কা করছেন ব্লকটির জন্য। জার্মানির পরিষেবা খাত চলতি বছরে প্রথমবারের মতো সংকুচিত হয়েছে আগস্টে। ফ্রান্সের সংকোচন ছিল প্রত্যাশার চেয়ে বেশি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে ব্রিটেনের বাণিজ্য কার্যক্রমেও দেখা গেছে মন্থরতা। এশিয়ার পরিষেবা খাতও অনেকটা নিম্নমুখী ছিল। বিশেষ করে চীনের পরিষেবা কার্যক্রম সম্প্রসারণের গতি ছিল মন্থর। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশটিতে চাহিদা সংকুচিত হয়ে আসছে ক্রমে। এদিকে ভারতের সম্প্রসারণেও গতি কমেছে কিছুটা।

জাপান কিছুটা ব্যতিক্রম চিত্র দেখিয়েছে। তিন মাসের মধ্যে দেশটিতে পরিষেবা খাতের গতি ছিল সবচেয়ে দ্রুত। পর্যটন শিল্পের হাত ধরে বেড়েছে ভোক্তাব্যয়, যা প্রভাব ফেলেছে অর্থনীতিতে। বৈশ্বিক ইকুইটিরও সংকোচন ঘটেছে আগস্টে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এশিয়ার দুর্বল অর্থনৈতিক অগ্রগতিই মূলত বৈশ্বিক পরিসংখ্যানে প্রধান ভূমিকা রাখছে।

ইউরোজোনের পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স (পিএমআই) তৈরি করেছে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল। দেখা গেছে, পিএমআই আগস্টে ৪৬ দশমিক ৭ পয়েন্টে নেমে এসেছে, যা জুলাইয়ে ৪৮ দশমিক ৬ পয়েন্ট ছিল। ২০২০ সালের নভেম্বরের পর এটিই সর্বনিম্ন। পিএমআই ৫০ পয়েন্টের ওপরে থাকলে কারখানার কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও নিচে থাকলে সংকোচন বোঝায়। পূর্বাভাসে পিএমআই ৪৭ পয়েন্ট থাকার কথা বলা হয়েছিল, বাস্তবিক অর্থে যা আরো কম। এসঅ্যান্ডপির দাবি অনুযায়ী, এটি ইউরোজেনের দশমিক ১ শতাংশ জিডিপি সংকোচনকে নির্দেশ করে। ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অ্যাড্রিয়ান প্রেটাজন বলেছেন, ‘বর্তমানে দুই সপ্তাহ আগের তুলনায়ও পিএমআই সূচক নিচে। বছরের দ্বিতীয়ার্ধে আমরা একটা মন্দার আশঙ্কা করছি।’‌

আরও পড়ুন: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ ঢাকা আসছেন আজ

ইউরোজোনের হেডলাইন পরিষেবায় পিএমআই ৫০ দশমিক ৯ পয়েন্ট থেকে ৪৭ দশমিক ৯ পয়েন্টে নেমে এসেছে, যা পূর্বাভাসের তুলনায় কম। পূর্বাভাসে ৪৮ দশমিক ৩ পয়েন্ট থাকার কথা বলা হয়েছিল। চাহিদা কমে যাওয়ায় নতুন ব্যবসা সংকুচিত হয়েছে। গত মাসে শিল্পোৎপাদন খাতের ক্ষত কিছুটা কাটিয়ে উঠেছে ব্লকটি। বিশ্লেষকদের ধারণা, ইউরোজোনের শিল্পোৎপাদন খাতের সবচেয়ে কঠিন সময় অতিক্রান্ত হতে চলেছে। তবে পরিষেবা খাতের পিএমআই থেকে দেখা যায়, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেনের অবস্থান ছিল ব্রেকইভেন পয়েন্টের নিচে। অর্থনীতিবিদ মারটিন বেক দাবি করেছেন, আগস্টের পরিষেবা খাতের পিএমআই যুক্তরাজ্যের বেসরকারি খাতের সংকোচনকে তুলে ধরেছে। তবে তৃতীয় প্রান্তিকেও জিডিপি বাড়তে পারে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি একটা দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

চীনের কাইশিন/এসঅ্যান্ডপি পরিষেবা পিএমআই ৫১ দশমিক ৮ পয়েন্টে নেমে এসেছে, জুলাইয়ে যা ছিল ৫৪ দশমিক ১ পয়েন্ট। গত বছরের ডিসেম্বরের পর এটিই সর্বনিম্ন। পিএমআইয়ের নিম্নগতি অব্যাহত থাকার ঝুঁকি রয়েছেই।

ভারতের সার্বিক পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত শক্তিশালী। যদিও পিএমআই জুলাইয়ের তুলনায় কমেছে। জুলাইয়ে পিএমআই ছিল ৬২ দশমিক ৩ পয়েন্ট। বিপরীতে আগস্টে পিএমআই দাঁড়িয়েছে ৬০ দশমিক ১ পয়েন্ট। বিশ্বব্যাপী এ প্রবণতার বিপরীত স্রোত দেখা গেছে জাপানে।

জাপানে পিএমআই জুলাইয়ে ছিল ৫৩ দশমিক ৮ পয়েন্ট, যা আগস্টে বেড়ে ৫৪ দশমিক ৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

অর্থসংবাদ/এমআই

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া