আগামী সপ্তাহে ফেডারেল রিজার্ভের নীতিনির্ধারকদের বৈঠকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস প্রত্যাহার হবে বলেও আশা করা হচ্ছে। গোল্ডম্যান স্যাকসের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ‘আমরা মনে করি, আগের চেয়ে শ্রমবাজারের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা, মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে ভালো খবর এবং আসন্ন চতুর্থ প্রান্তিকের সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি আরো মানুষকে আশাবাদী করে তুলবে যে ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটি শেষ পর্যন্ত এ বছর সুদহার বাড়াবে না।’ তবে সাধারণের এমন প্রত্যাশাকে পাশে রেখে মূল্যস্ফীতির পাগলা ঘোড়ার লাগাম আরো শক্ত হাতে টেনে ধরতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গোল্ডম্যান স্যাকসের অর্থনীতিবিদরা ফেডের ‘ডট প্লট’ প্রত্যাশা করছেন। ডট প্লট মূলত নীতিনির্ধারকদের সুদহারের পূর্বাভাসকে প্রতিফলন করে, যেটি আগামী বুধবার আপডেট করা হতে পারে।
সাধারণত বাজারের অংশীদাররা ফেডের মুদ্রানীতির গতিপথ বোঝার চেষ্টা করেন। জেপি মরগান অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ও জানুস হেন্ডারসন ইনভেস্টর তেমনই বড় দুটি বাজার অংশীদার। তারাসহ বড় বিনিয়োগকারীরা বলেছেন, কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে আক্রমণাত্মক মুদ্রানীতি কঠোরকরণ চক্র অনুসরণ করে সুদহার বাড়াতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আরও পড়ুন: ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার বৃদ্ধি, ব্যাপক উত্থানে ক্রিপ্টো মার্কেট
সিএমই গ্রুপের ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী, ফেডের বেঞ্চমার্কের সঙ্গে সংযুক্ত ফিউচার মার্কেটগুলোর ৯৮ শতাংশই মনে করে ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির (এফওএমসি) ১৯-২০ সেপ্টেম্বরের সভায় সুদহার বাড়ানো হবে না। আর ৩১ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বরের সভার আগ পর্যন্ত নীতি সুদহার ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে অপরিবর্তিত থাকবে।
গোল্ডম্যানের বিশ্লেষকরা মনে করেন, যদি মূল্যস্ফীতি কমতে থাকে, তাহলে ২০২৪ সালে সুদহার ধীরে ধীরে কমতে পারে। নীতিনির্ধারকরা বুধবার তাদের অর্থনৈতিক পূর্বাভাস সংশোধন করে বাড়াতে পারে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকও তার ২০২৩ সালের মার্কিন প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত করতে পারে। সংশোধিত প্রাক্কলন মূলত যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বার্তা দিচ্ছে।
গোল্ডম্যানের অর্থনীতিবিদরা আশা করছেন, ফেড ২০২৩ সালের বেকারত্ব হারের পূর্বাভাস শতাংশ পয়েন্টে দুই-দশমাংশ কমিয়ে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ করবে। পাশাপাশি মূল মূল্যস্ফীতির প্রাক্কলনও শতাংশ পয়েন্টে চার-দশমাংশ কমিয়ে ৩ দশমিক ৫ শতাংশে কমিয়ে আনবে।
অন্যদিকে, ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য অর্থনীতিতে বিদ্যমান প্রভাব বিবেচনায় নতুন করে সুদহার বাড়ানোর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। এর পরও কোনো কোনো অর্থনীতিবিদ সুদহার বাড়ানো হতে পারে বলে মনে করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ব্রেট রায়ান বলেছেন, ‘আমরা আশা রাখি ২০ সেপ্টেম্বর ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির সভায় সুদহার অপরিবর্তিত রাখা হবে। তবে ফেড যদি সুদহার আরো এক ধাপ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। মূল্যস্ফীতিতে এর মধ্যেই সুদহার বৃদ্ধির প্রভাব দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।’
অর্থসংবাদ/এমআই