আইএমএফের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর গীতা গোপীনাথ বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাপী ঘাটতির হার বেশি। পাশাপাশি রয়েছে উচ্চ সুদহারের প্রবণতা দীর্ঘ হওয়ার ঝুঁকি। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিষয়গুলো সাবধানে পর্যবেক্ষণ জরুরি।’
চলতি বছরের আগস্টে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের পক্ষ থেকে উচ্চ সুদহারের ইঙ্গিত দেয়া হয়। তারপর এ প্রথম বৈঠক করলেন বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, আইএমএফ ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের কর্তাব্যক্তিরা।
হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের জেরে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের বাজারে। এর মধ্য দিয়ে অর্থনীতিতে নতুন করে যুক্ত হয়েছে আরেকটি অনুঘটক। সেদিকে ইঙ্গিত করে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা লেগার্দে বলেন, ‘সাম্প্রতিক দিনগুলোয় নীতিনির্ধারকরা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা খুঁজে পেয়েছেন। যদিও সুদহার বাড়ার প্রবণতা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার ফল এখনো পুরোপুরি দৃশ্যমান নয়। তবে তা খুব দ্রুতই সামনে আসবে।’
এর আগে জি২০ সদস্য দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী ও গভর্নররা বৈশ্বিক অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। দাবি করা হয়, চলমান ভূরাজনৈতিক টানাপড়েন, প্রতিকূল আবহাওয়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সুদহার বাড়ার কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো ঘাটতির মধ্যে পড়বে। আর যদি হামাস-ইসরায়েল সংঘাত আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নেয়, তবে জ্বালানি তেলের মূল্য আরো বাড়বে। প্রভাব ফেলবে ভোক্তাদের যাপিত জীবনে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেসন ফারম্যান বলেন, ‘আমি সবসময় ইরানকে নিয়ে উদ্বিগ্ন। সংঘাতে দেশটির সংযুক্তি বিদ্যমান পরিস্থিতিকে মারাত্মক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।’
দেশে দেশে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমতে থাকলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ডয়েচে ব্যাংক এজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিশ্চিয়ান সুয়িং বলেন, ‘উচ্চ সুদহারের প্রবণতা আরো দীর্ঘ হবে। এর প্রভাবও পড়বে গ্রাহকদের ওপর। আর ঋণসংক্রান্ত ব্যয় ও আবাসন খাতের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার মানে আগামী দুই বছর কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাবে বৈশ্বিক অর্থনীতি। এটা একই সঙ্গে ব্যবসায়ী ও নীতিনির্ধারকদের জন্য ঝুঁকি।’
বিশ্বব্যাংকের কর্তব্যক্তিরা মনে করেন সুদহার বাড়ার প্রবণতা দীর্ঘ হলে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সম্প্রতি ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান জুবিলি ইউএসএ নিটওয়ার্কের বিবৃতিতে দাবি করা হয়, সুদহার বৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে সহযোগিতা করা উচিত। তাছাড়া একদিকে আইএমএফ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে এনেছে, অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করেছে। এমন সময়েও সুদহার বাড়ার প্রবণতা অযৌক্তিক।
অর্থসংবাদ/এমআই