সম্প্রতি স্বর্ণের দাম বাড়ায় তা ১২ মাসের রিটার্নভিত্তিক এসঅ্যান্ডপির ৫০০ সূচক এসপিএক্সকে ছাড়িয়ে গেছে। ডাও জোনসের বাজার তথ্যানুযায়ী, কমেক্সের সবচেয়ে সক্রিয় ডিসেম্বরের স্বর্ণ সরবরাহ চুক্তিমূল্য ৩২ ডলার ৬০ সেন্ট বা ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৯৬৮ ডলার ৩০ সেন্টে দাঁড়িয়েছে, আগে যা ১ হাজার ৯৭৫ ডলার ৮০ সেন্টে উঠেছিল। ৩০ আগস্টের পর স্বর্ণের দাম সর্বোচ্চে রয়েছে।
গত এক বছরে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় স্বর্ণের ভবিষ্যৎ সরবরাহমূল্য ১৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ রিটার্ন দেখেছে। যেখানে এসঅ্যান্ডপি ৫০০-এর রিটার্ন ছিল ১৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ ও মোট রিটার্ন হচ্ছে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। সুইসকোট ব্যাংকের সিনিয়র অ্যানালিস্ট ইপেক ওসকারদেসকায় বলেন, ‘ঝুকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে স্বর্ণ একটি নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগ মাধ্যম। এ কারণে রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময়ে ঝুঁকিপূণ্য সম্পদের দরপতন হতে থাকে এবং স্বর্ণের দাম বাড়তে শুরু করে।’
লিবার্টাস ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের প্রেসিডেন্ট অ্যাডাম কুস মার্কেটওয়াচকে বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক সংঘাত বর্তমানে স্বর্ণের বাজার ঊধ্বমুখী হওয়ার জন্য শতভাগ দায়ী।’
সিটি ইনডেক্স এবং ফরেক্স ডটকমের বাজার বিশ্লেষক ফাওয়াদ রাজাকজাদা বলেন, ‘ডলারের বিনিময় হারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ও মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের উচ্চ সুদ হার সুবিধা থাকা সত্ত্বেও স্বর্ণে বিনিয়োগ বাড়ছে। কারণ মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাত স্বর্ণের দাম বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।’ স্বাভাবিক সময়ে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে নিম্নমুখী চাপে পড়ে স্বর্ণের বাজার। তিনি বলেন, ‘যদি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার গোলযোগ থামলেই স্বর্ণের দাম কমে যাবে।’
রাজাকজাদা বলেন, ‘স্বর্ণের দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে মনে হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা অঞ্চলের অবস্থা দেখে মূল্য নির্ধারণ করছেন। তবে সে রকম কিছু যদি না হয়, তাহলে দ্রুতই ধাতুটির দাম কমবে।’
অন্যদিকে কিনেসিস মানির বাজার বিশ্লেষক মাইকেল ইনগ্রাম জানান, যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হারে পরিবর্তন আসা সত্ত্বেও স্বর্ণের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দুদিন আগেও স্বর্ণের দাম কিছুটা কমেছিল। ৭ অক্টোবর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে ধাতুটির বৈশ্বিক বাজার। মধ্যপ্রাচ্যের এ ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে স্বর্ণের দাম প্রায় ৩ শতাংশ বেড়ে যায়।
অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার সময় বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণ ক্রয় বাড়িয়ে দেন। ধাতুটির দাম অস্বাভাবিক ওঠানামা না করায় বিশ্বব্যাপী স্বর্ণকে নিরাপদ বিনিয়োগমাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতার কারণে ধাতুটির দাম সাত মাসের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে।
অর্থসংবাদ/এসএম