সোমবার (২৭ জানুয়ারি) এমন তথ্যই জানিয়েছে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম।
মুম্বাইয়ের মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের (বিএমসি) স্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মজা কাসকরের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাটি জানায়, চীন থেকে হালকা সর্দি-কাশি নিয়ে মুম্বাইয়ে ফিরেছিলেন দু’জন ব্যক্তি। কোনও ঝুঁকি না-নিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করে কস্তুরবা হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এই সময় জানায়, চীনের প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত সন্দেহে চীন-ফেরত ১১ জনকে শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) তড়িঘড়ি ভর্তি করা হয় দেশের নানা হাসপাতালে।
পদ্মজা কাসকর জানায়, ভারতে এখন পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে কেরালায় ৭ জন, হায়দ্রাবাদে একজন ও বেঙ্গালুরুতে একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। কেরালায় ৭৩ জনকে বাড়িতে রেখে নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সে রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
কাসকর বলেন,‘শহরে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করা সব ডাক্তারকে সতর্ক করা হয়েছে, চীন থেকে উপসর্গ নিয়ে ফিরে কেউ তাদের দেখাতে এলে তখনই তা বিএমসিকে জানাতে হবে। পাশাপাশি ছত্রপতি শিবাজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের চিকিৎসকদেরও সতর্ক করা হয়েছে, চীন থেকে আসা যাত্রীদের মধ্যে করোনাভাইরাসের কোনও উপসর্গ ধরা পড়লেই দেরি না-করে আইসোলেশন ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে।
দিল্লি এআইএমএস অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া ভারতীয় গণমাধ্যমকে জানান, তারা করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আইসোলেশন ওয়ার্ড গড়ে প্রস্তুত আছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) এই আশ্বাস দিয়েছিল কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালও। সংক্রমণের তথ্য দিতে এদিনই দু’টি হটলাইন খুলেছে নয়াদিল্লির চীনা দূতাবাস।
বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে এই সংক্রমণের খবর মিলেছে জাপান, হংকং, ম্যাকাউ, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, সৌদি আরব, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর থেকেও। আমেরিকা এদিন আরও একজনের আক্রান্ত হওয়া নিশ্চিত করেছে। উহান থেকে ফেরা ৫ পর্যটককে আটকানো হয়েছে স্কটল্যান্ডেও। আতঙ্কের জেরে ব্যাঙ্কক ও শ্রীলঙ্কার নানা বিমানবন্দরে চীন থেকে ফেরা কোনও পর্যটককে বিন্দুমাত্র সন্দেহ হলেই, তাকে আর ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।
ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, সংক্রমণের উৎস চীনের উহান শহরে ভারতীয় বহু শিক্ষার্থী রয়েছে। যাদের বেশিরভাগই চীনের উহানসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী।
ভারতে যাতে কোনওভাবেই এই ভাইরাস সংক্রামিত না- হয়, সেজন্য বিমানবন্দরগুলোকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে আগেই। যে সব দেশ এরই মধ্যে এই ভাইরাসের কবলে, সেখান থেকে কোনও ব্যক্তি ভারতে এলে তাদের শারীরিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বিমানবন্দরগুলোতে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর, শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) পর্যন্ত দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই ও কলকাতাসহ ৭টি বিমানবন্দরে ২০ হাজার ৮৪৪ জন যাত্রীর শারীরিক পরীক্ষা করা হলেও এদিনের আগে মুম্বইয়ের ওই দু’জন বাদে আর তেমন কোনও সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়নি।
ভারতের বিভিন্ন ট্র্যাভেল এজেন্সি জানানয়, কলকাতা থেকে একাধিক এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট সরাসরি কুনমিং বা গুয়াংঝৌয়ের মতো শহরে যাতায়াত করে। সেগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, প্রায় কোনও পর্যটকই টিকিট বাতিল করেননি। বাতিল হয়নি হোটেল বুকিংও। দ্য ইন্ডিয়ান টাইমস, দ্য লঙ্কা হ্যারাল্ড, থাই নিউজ ও এই সময়।