অধ্যাপক নিকোলাস যাওয়ার ছিলেন এই নির্দেশিকা তৈরি সংক্রান্ত উপদেষ্টা বোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, চিকিৎসাবিজ্ঞানে পরীক্ষিত এবং বিভিন্ন সফল উপায়ে ধূমপান থেকে বিরত রাখার উদ্যোগই প্রাথমিকভাবে কাম্য। তবে যারা এসব উপায় অনুসরণ করেও ধূমপান ছাড়তে পারছেন না এবং নিকোটিন নিতে আগ্রহী, তারা ই-সিগারেট ব্যবহার করতে পারেন। তবে এখন পর্যন্ত ই-সিগারেট বা ভেপিং চিকিৎসাবিজ্ঞানের যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়নি।
চিকিৎসকদের উদ্দেশে নিকোলাস বলেন, ই-সিগারেট বা ভেপিংয়ের মাধ্যমে শরীরে কী প্রভাব পড়ে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তা সম্ভবত প্রচলিত সিগারেটের তুলনায় নিরাপদ। কেননা, এতে প্রচলিত সিগারেটের তুলনায় ক্ষতিকর উপাদান কম থাকে। অধ্যাপক নিকোলাসের মতে, ভেপিংয়ের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের বিষয়টি এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। তবে ধূমপান ছাড়ার ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতা রয়েছে। সে বিবেচনায় ই-সিগারেট বা ভেপিং ধূমপান ছাড়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হিসেবে ভাবা যেতে পারে।
আরএসিজিপির প্রেসিডেন্ট হ্যারি নেসপোলন বলেন, ধূমপান ছাড়ার বিভিন্ন উপায়ের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট চিকিৎসা (ধূমপানের পরিবর্তে অন্য উপায়ে শরীরে নিকোটিন প্রবেশ করানো)। যারা ধূমপান ছাড়তে চান তারা প্রাথমিকভাবে নিকোটিনযুক্ত লজেন্স ও চুইংগাম ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এর কার্যকারিতা ইতোমধ্যে প্রমাণিত। এতেও কাজ না হলে নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট চিকিৎসার অংশ হিসেবে ই-সিগারেট ব্যবহার করা যেতে পারে। ভেপিং সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকার কারণেই অনেকে হুট করে তা নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগে উল্টো প্রভাব ফেলতে পারে। ধূমপান ছাড়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করে ই-সিগারেট। তা নিষিদ্ধ করা হলে ধূমপান ছাড়ার উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ায় বর্তমানে ১২ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ দৈনিক ধূমপান করে। তাদের অধিকাংশ 'চেইন স্মোকার' এবং নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের পক্ষে নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট চিকিৎসা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। হ্যারি নেসপোলন বলেন, ধূমপান ছাড়ার ক্ষেত্রে নিকোটিন মিশ্রিত গাম বা লজেন্স কার্যকরী হবে। তবে এতেও কোনো প্রভাব না পড়লে ই-সিগারেটের ওপর নির্ভর করা যেতে পারে। কেননা, এতে শরীরের নিকোটিনের চাহিদাও পূরণ হয় আবার প্রচলিত সিগারেটে থাকা ক্ষতিকর উপাদান থেকেও নিরাপদ থাকা যাবে।