অশোক সেনগুপ্তের জন্ম বোয়ালখালীর খিতাপচর গ্রামে ১৯৪৯ সালে। মা মৃণালিনা সেনগুপ্তা ও বাবা যতীন্দ্রলাল সেনগুপ্ত। ১৩ বছর বয়সে সঙ্গীত জীবনের শুরু। ঊনসত্তরের উত্তাল রাজপথ থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে গণসংগীত নিয়ে সাহসী ভূমিকা রাখেন তিনি।
তিনি আওয়ামী শিল্পী গোষ্ঠীর দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে গণজাগরণের গান গেয়ে বহুবার মুখোমুখি হয়েছেন জীবন সংশয়েরও। বেতারে আধুনিক গানে এবং বিটিভিতে নজরুল সংগীতে প্রথম শ্রেণির শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন তিনি এবং বেতারে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে ছিলেন অশোক সেনগুপ্ত।
এছাড়া তিনি শিক্ষক হিসেবে অসংখ্য তরুণের ভেতর ছড়িয়ে দিয়েছেন গণসংগীত। অশোক সেনগুপ্ত চার শতাধিক গণসংগীত রচনা করেছেন। দিয়েছেন সুর, গেয়েছেনও। শতাধিক আধুনিক ও ধর্মীয় গানের স্রষ্টা তিনি। রচনা ও পরিবেশনা করেছেন গীতি আলেখ্য-‘বিক্ষুব্ধ বাংলা’, ‘দিন বদলের পালা’, ‘সর্বনাশী রাঙ্গাবলী’। সুরারোপ করেছেন সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘অভিযান’ নৃত্যনাট্যের।
তার উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘যেখানে পাখির গানে সকাল আসে, রাঙ্গা সূর্য হাসে সবুজ ঘাসে, আমি যেন বারবার জন্ম লভি সেই দেশে, আমার বাংলাদেশে’, ‘জেগে ওঠো বাংলা ৭১ এর চেতনায়, এবার অস্ত্র নয় জনযুদ্ধে আনবো বিজয়, দুর্বার একতায়, জেগে ওঠো বাংলা, জেগে ওঠো’, ‘তোরা যুদ্ধ অপরাধী, তোরা মানবতাবিরোধী, তোদের হবে না দেশে ঠাঁই, তাইতো জেগেছে বিপ্লবী জনতা, তোদের বিচার চাই’, ‘বাংলা মাগো সবুজ ঘাসের চাদর দিও জাতির পিতার গায়, পরম সুখে ঘুমিয়ে থাকুক টুঙ্গিপাড়ায়’ ইত্যাদি।
তার স্ত্রী নৃত্যশিল্পী রত্না সেনগুপ্তা। দুই সন্তান কত্থক নৃত্যশিল্পী তিলোত্তমা সেনগুপ্তা এবং অভিনয় ও আবৃত্তি শিল্পী ইমন সেনগুপ্ত (প্রয়াত)। জামাতা নাট্যজন অসীম দাশ।