এইচ-১বি ভিসা সংক্রান্ত রদবদলের চূড়ান্ত নীতি ফেডেরাল রেজিস্টারে প্রকাশিত হবে আগামী ৮ জানুয়ারি। আমেরিকার কর্মীদের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার্থে এই রদবদলের চিন্তা-ভাবনা বলে জানিয়েছে ইউনাইটেড স্টেটস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (ইউএসসিআইএস)। পাশাপাশি, আমেরিকার সংস্থাগুলি যাতে নতুন ভিসা নীতির মাধ্যমে বিদেশের দক্ষ কর্মীদেরই একমাত্র নিয়োগ করতে পারে, সেই উদ্দেশ্যপূরণ করাও এর লক্ষ্য বলে জানিয়েছে ওই ডিপার্টমেন্ট।
প্রতি বছর গড়ে ৮৫ হাজার এইচ-১বি ভিসা দেয় আমেরিকা। এর মধ্যে বিদেশি কর্মী ছাড়া আমেরিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী পড়ুয়ারাও রয়েছেন। ৩ বছর মেয়াদের এই ভিসা পুনর্নবীকরণ করা যায়। এইচ-১বি ভিসা নিয়ে ভারত-চিন ছাড়া বিশ্বের বহু দেশ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা আমেরিকায় আসেন। তবে ইউএসসিআইএস-এর পর্যবেক্ষণ, আমেরিকার বাণিজ্যিক তথা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি এই ভিসার মাধ্যমে কর্মী নিয়োগে যথাযথ ফায়দা তুলতে ব্যর্থ হচ্ছে।
বিশ্বের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে এবং নিজেদের ব্যবসায়িক লক্ষ্যপূরণে ওই সংস্থাগুলিকে অতি দক্ষ কর্মীদের উঁচু পদে নিয়োগ করতে হবে বলে মনে করেন ইউএসসিআইএস-এর আধিকারিকেরা। ইউএসসিআইএস-এর ডেপুটি ডিরেক্টর অব পলিসি জোসেফ এডলো বলেন, “এইচ-১বি ভিসার মাধ্যমে নিয়োগের যথোপযুক্ত ফায়দা তুলতে পারেনি বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি। ব্যবসার ব্যয়ভার কমাতে সংস্থাগুলি এই ভিসার মাধ্যমে নিচুস্তরের কর্মীদের নিয়োগ করেছে।’’ তবে বর্তমান এইচ-১বি ভিসা নীতিতে যে ফাঁকফোকর রয়েছে, তা-ও মনে করেন তিনি। জোসেফের মতে, ‘‘বর্তমানে এইচ-১বি ভিসার মাধ্যমে যে প্রক্রিয়ায় কর্মীদের নির্বাচন করা হয়, তাতে এই ভিসার সাহায্য আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ কর্মী নিয়োগ করতে পারেনি সংস্থাগুলি। যার ফলে আমেরিকার কর্মীদের বদলে নীচুস্তরে কম বেতনে বিদেশিদের নিয়োগ করা হয়েছে।’’
গোটা ব্যবস্থায় আমেরিকার সংস্থাগুলির মুনাফার পাশাপাশি সে দেশের নাগরিকদের কংর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই আবহে গত বছরের ২ নভেম্বর এইচ-১বি ভিসা নীতির পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়ে নোটিস দেয় ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। এ নিয়ে আম জনতার মতামতও আহ্বান করা হয়। তার পর সেই প্রস্তাবিত নিয়মগুলি প্রকাশিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএসসিআইএস।
আগামী ১ এপ্রিল থেকে এইচ-১বি ভিসার জন্য আবেদনপত্র পূরণ করা শুরু হবে। নয়া নিয়ম প্রকাশিত হওয়ার পর ৬০ দিন পর্যন্ত তা কার্যকর থাকবে।