গত বছর সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় দেশেরই কয়েকজন সেনার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এর জেরে ২২০টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করে ভারত। এ রকম তিক্ততা সত্ত্বেও ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার হয়েছে চীন। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক তথ্যমতে, গত বছর দেশ দুটির মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৭৭০ কোটি ডলার। অবশ্য এশিয়ার শীর্ষ দুই অর্থনীতির মধ্যে গত বছর বাণিজ্যের পরিমাণ পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে কম হয়েছে। ২০১৯ সালে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৫৫০ কোটি ডলার। মহামারীর মধ্যেও উভয় দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য বেশ আশাব্যঞ্জক।
করোনার কারণে সারা বিশ্বেই বাণিজ্য প্রবাহ কমেছে। তবে চিকিৎসা-সরঞ্জাম ও সরবরাহের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। প্রযুক্তি ও অন্যান্য খাতে স্বনির্ভর হতে ও বেইজিংয়ের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে চেষ্টা করে যাচ্ছে নয়াদিল্লি। তবে এখনো দেশটি ভারী যন্ত্রপাতি, টেলিকম ও গৃহ সরঞ্জামের জন্য চীনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
গত বছর চীন থেকে ৫ হাজার ৮৭০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে ভারত, যা যৌথভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে করা আমদানির চেয়েও বেশি। ভারতের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউএই।
এ প্রসঙ্গে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের অর্থনীতিবিদ অমিতেন্দু পালিত বলেন, চীন থেকে আমদানির ওপর ভারতের অব্যাহত নির্ভরশীলতার কারণ হচ্ছে দেশে এসব পণ্যের দুষ্প্রাপ্যতা।
তিনি আরও বলেন, চীন থেকে আমদানিতে ব্যয় কম এবং অল্প সময়ে অধিক পরিমাণে আনা যায়। চীনের মতো এত স্বল্প খরচে ও সহজভাবে অন্য দেশ থেকে থেকে আমদানি করা সম্ভব নয়।
গত বছর জুনে লাদাখ সীমান্তে চীন ও ভারতের সামরিক বাহিনীর মধ্যকার সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হয়। গত সপ্তাহে চীন জানায়, ওই সংঘর্ষে দেশটির চার সেনাও নিহত হয়েছিলেন। ওই সংঘর্ষের জেরে টিকটক, উইচ্যাটসহ দুই শতাধিক চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করে ভারত। অ্যাপগুলো দেশের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক বলে জানায় ভারত।