যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান অফিসের (ওএনএস) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৭ সালে রেকর্ড শুরু হওয়ার পর এটিই সবচেয়ে বড় হ্রাস। ইইউর সঙ্গে বাণিজ্য হ্রাসের পেছনে অস্থায়ী কিছু কারণকে দায়ী করেছে ওএনএস।
এদিকে নতুন তথ্যে দেখা গেছে, তৃতীয় লকডাউনের মধ্যে জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ২ দশমিক ৯ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। কভিড-১৯ মহামারী শুরুর আগের পর্যায়ের তুলনায় এ সময়ের অর্থনীতি ৯ শতাংশ ছোট ছিল।
ওএনএ জানিয়েছে, ইইউ থেকে আমদানি এবং জোটটিতে রফতানি উভয়ই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্য থেকে ইইউতে মোট ৫৬০ কোটি পাউন্ডের পণ্য রফতানি হয়েছে। একই সময়ে ইইউ থেকে আমদানি কমে ৬৬০ কোটি পাউন্ডে দাঁড়িয়েছে। দেশে আসা পণ্যগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই ছিল যন্ত্রপাতি, পরিবহন সরঞ্জাম ও রাসায়নিক। এক্ষেত্রে গাড়ি আমদানির পাশাপাশি ওষুধ ও ওষুধজাতীয় পণ্যগুলো বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।
হিসাবরক্ষক সংস্থা কেপিএমজি যুক্তরাজ্য ও ইইউর মধ্যে বাণিজ্য হ্রাসের পেছনে ব্রেক্সিটকে দায়ী করেছে। অন্যদিকে ইইউর বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যে বাণিজ্য জানুয়ারিতে ১ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কেপিএমজি বলেছে, ব্রেক্সিট কার্যকরের আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মজুদের কারণে দুই পক্ষের বাণিজ্য বেড়ে গিয়েছিল। আর জানুয়ারিতে সংস্থাগুলো নতুন করে পণ্য কেনার পরিবর্তে স্টকে থাকা পণ্যগুলো ব্যবহার করেছে।
যুক্তরাজ্যে নভেল করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেনও ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য হ্রাসে ভূমিকা রেখেছিল। নতুন স্ট্রেনের কারণে ইউরোপের দেশগুলো যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ায় বাণিজ্য জটিলতা ও বিলম্বের কারণ হয়েছিল। তবে ফার্মগুলো জানিয়েছে, বাণিজ্য সহজতর হচ্ছে এবং জানুয়ারির শেষ দিকে বাণিজ্য পুনরুদ্ধার হতে শুরু করেছে।
ব্রিটিশ চেম্বারস অব কমার্সের প্রধান অর্থনীতিবিদ সুরেন থিরু বলেন, ইইউয়ে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য হ্রাস ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্যের এক অশুভ ইঙ্গিত দেয়। এ বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ার কারণে ২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হতে পারে।
সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, গত বছর ইউরোপজুড়ে লকডাউন এবং আমাদের নতুন ব্যবসায়িক সম্পর্কের সঙ্গে সামঞ্জস্য হওয়া ব্যবসাসহ এক অনন্য সংমিশ্রণ এটিকে অনিবার্য করে তুলেছে যে জানুয়ারিতে রফতানি কম হবে। এ তথ্য ব্রেক্সিটের পরে সামগ্রিক ইইউ-যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য সম্পর্ককে প্রতিফলিত করে না। এছাড়া ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই যুক্তরাজ্য ও ইইউর মধ্যে সামগ্রিক পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে এসেছে।