বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলোর পরিপালনের জন্য এ ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, এর ফলে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে ব্যাংক হিসাব খোলা সহজ হয়ে যাবে। এতে এ দেশে তারা বিনিয়োগে আরো উৎসাহিত হবেন।
জানা গেছে, বিদেশী কোনো বিনিয়োগকারী তারা নিজেরা বা যৌথ মালিকানায় বিনিয়োগ করতে চাইলে প্রথমে ব্যাংক হিসাব খুলতে হয়। আর এ ব্যাংক হিসাব খুলতে তাদের স্বশরীরে এ দেশে আসতে হয়। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বিইপিজেডএ), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ইত্যাদি কর্তৃপক্ষের কাছে এসে তাদের অ্যাকাউন্ট খুলতে সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হতো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশে ব্যবসায় সহজীকরণ ও পরিবেশবান্ধব ব্যাংকিং কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক হিসাব খোলার পদ্ধতি সহজ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ সিদ্ধান্তের আলোকে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর পরিপালনের জন্য নতুন এক নির্দেশনা দেয়া হয়। ওই নির্দেশনায় বলা হয়, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আর এ দেশে আসতে হবে না। তারা ঘরে বসেই অনলাইনে ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবেন।
এজন্য তাদের এ দেশের সব তফসিলি ব্যাংক বা বিডা, বেপজা, বেজা বা হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে গ্রাহকরা তাদের ওয়েবসাইট বা ওয়েব পোর্টাল বা অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইানে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। তবে গ্রাহকদের লেনদেনের জন্য তাদের ব্যাংক চেক প্রদানের আগে তাদের গ্রাহক পরিচিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের বা বিএফআইউয়ের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো গ্রাহক ব্যাংকে লেনদেন করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে গ্রাহক পরিচিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হয়। দেশের প্রচলিত নীতিমালা অনুযায়ী ব্যাংকগুলো গ্রাহকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সময় বিএফআইইউ নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রাহককে নির্ধারিত কেওয়াইসি ফরম পূরণ করতে হয়। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে গ্রাহক অ্যাকাউন্ট খোলার সময় হাজির না হলেও হিসাব পরিচালনাকারীর নমুনা স্বাক্ষর অনলাইনে ভেরিফাই চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে। এজন্য সব তফসিলি ব্যাংককেই এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মূলত বিদেশী গ্রাহকদের এ দেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতেই হিসাব খোলার নীতিমালা সহজ করা হয়েছে। এর আগে মুনাফা ঘরে নেয়াসহ লেনদেনের ক্ষেত্রে নীতিমালা শিথিল করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশীয় উদ্যোক্তাদের মতে, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য নীতিমালা সহজ করার পাশাপাশি দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্যও নীতিমালা সহজ করা প্রয়োজন। অন্যথায় দেশীয় উদ্যোক্তারা অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবেন।