তথ্যমতে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ফয়সাল মামলাগুলোয় পদ্মা ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান বাবুল চিশতীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। ওইদিন বিচারক আসামির উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য ৮ মার্চ দিন রাখেন। গতকাল বাবুল চিশতীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয় ১-এ মোহাম্মদ ফয়সাল বাদী হয়ে বাবুল চিশতী ও তার পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচ মামলা করেন। ওই পাঁচ মামলায়ই আসামি হলেন বাবুল চিশতী। মামলাগুলোয় বাবুল চিশতীর সঙ্গে তার স্ত্রী মোছা. রোজি চিশতী, ছেলে রাশেদুল হক চিশতী, ছেলের স্ত্রী ফারহানা আহমেদ ও তার মেয়ে রিমি চিশতীকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, দুদকের অনুসন্ধানে বাবুল চিশতীর নামে ২৮ কোটি ৫৫ লাখ ৬১ হাজার ৫৯০ টাকার অবৈধ সম্পদ, স্ত্রী মোছা. রোজি চিশতীর নামে ৩৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকার সম্পদ, ছেলে রাশেদুল হক চিশতীর নামে ৩২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, ছেলের বউ ফারহানা আহমেদের নামে ১৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকার সম্পদ এবং মেয়ের নামে ২১ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী আর্থিক খাতের জাল-জালিয়াতিতে জড়িত বহুল আলোচিত নাম। তিনি ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে কৌশলে প্রায় এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ২০১২ সালে তৃতীয় প্রজন্মের ব্যাংক হিসেবে আওয়ামী লীগের গত মেয়াদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নেতৃত্বে অনুমোদন পায় ফারমার্স ব্যাংক। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে ব্যাংকটি। ২০১৫ সালে পাঁচ ঋণে বড় জালিয়াতির তথ্য ফাঁসের পর তাকে ফারমার্স ব্যাংকের সব পদ ছাড়তে হয়েছে। এরপর কয়েক বছরে প্রায় এক ডজন মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। দুদকের তদন্তেও বাবুল চিশতী ও তার স্বজনদের নামে প্রায় ২১৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য উঠে এসেছে। অর্থের জোরে যুদ্ধাপরাধী থেকে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে উঠেছেন বাবুল চিশতী।