আবার কিছু কিছু দেশের পারিবারিক সঞ্চয় এর চেয়ে বেশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অতিরিক্ত সঞ্চয় শিগগিরই মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। এর পেছনে অবশ্য সদ্য পাস হওয়া ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজের আংশিক ভূমিকা আছে।
মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগ্যান চেজের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ধনী দেশগুলোতে ভোক্তা ব্যয় শিগগিরই প্রাক-মহামারি পর্যায়ে চলে যাবে।
দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, আর্থিক মন্দার সময়েও পারিবারিক সঞ্চয় এত বৃদ্ধি পায় না। অনেকেই আয় হারিয়েছেন তা ঠিক, কিন্তু ধনী দেশগুলো মহামারির চূড়ান্ত সময়ে বেকার ভাতাসহ বিভিন্ন খাতে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ৫ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় করেছে। এতে গত বছর পারিবারিক আয় উল্টো বেড়েছে। একই সঙ্গে আবার লকডাউনের কারণে মানুষের ব্যয়ের পথ বন্ধ হয়েছে। লকডাউন এখন উঠে গেছে। কিন্তু সেবা খাত পুরোপুরি চালু হয়নি। স্বাস্থ্যগত কারণে মানুষের চলাচল এখনো সীমিত। এসব কারণে বাস্তবে ধনী দেশগুলোতে মানুষের আয় বেড়েছে।
এদিকে এই দেশগুলো এক ধাক্কায় এই অর্থ ব্যয় করলে ২০২১ সালে ধনী দেশগুলোর মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ১০ শতাংশ ছাড়াবে—দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরও প্রবৃদ্ধির এমন বাড়বাড়ন্ত হয়নি। আরেকটি সম্ভাবনা হলো প্রণোদনা প্যাকেজ দেওয়ার জন্য করদাতাদের কর বৃদ্ধি পাবে, এমন সম্ভাবনা থাকলে মানুষ ব্যয় বন্ধ করে দিতে পারে।
তবে বাস্তবতা ঠিক এ রকম নয়। মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগ্যান চেজের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ধনী দেশগুলোতে ভোক্তা ব্যয় শিগগিরই প্রাক-মহামারি পর্যায়ে চলে যাবে। তাতে এবার প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগবে। গোল্ডম্যান স্যাকসের ভবিষ্যদ্বাণী হলো, অর্থনীতি পুরোপুরি চালু হলে প্রবৃদ্ধির হার ২ শতাংশ বাড়বে।
কিন্তু এই অতিরিক্ত সঞ্চয় মানুষ আয় হিসেবে বিবেচনা করবে, নাকি সম্পদ, তা নিয়ে ধন্দ আছে বলে মনে করছে দ্য ইকোনমিস্ট। দেখা গেছে, আয় বাড়লে পরিবারের ব্যয় বাড়ে। কিন্তু সম্পদের মূল্য বাড়লে, অর্থাৎ পৈতৃক বাড়ির মূল্য বাড়লে মানুষ সাধারণত ব্যয় বাড়ায় না। তবে কীভাবে এই সঞ্চয় হচ্ছে, ব্যয় শেষমেশ তার ওপর নির্ভর করে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে প্রণোদনা প্যাকেজের কারণে সঞ্চয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় যাঁরা সঞ্চয় বৃদ্ধি করেছেন, তাঁরা খরচ করতে খুব একটা দোনোমনা করবেন না বলেই বিশ্লেষকদের ধারণা।