বুধবার বার্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনে মেরকেল বলেন, ভাইরাস যখন ছড়িয়ে পড়েছে, তখন এর থেকে পালানোর কোনও উপায় নেই এবং এখন পর্যন্ত কোনও থেরাপিও পাওয়া যায়নি। এ কারণে দেশের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ সংক্রমিত হতে পারেন।
জার্মান এই চ্যান্সেলর বলেন, এই প্রক্রিয়ায় ভাইরাসটির বিস্তারকে ধীরগতির করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে অতিরিক্ত চাপ না দেয়ার দিকে মনোনিবেশ করতে হবে...এটিই জয়ী হওয়ার সময়।
দেশটির জনপ্রিয় ও সর্বাধিক বিক্রিত দৈনিক ডেইলি বিল্ড করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চ্যান্সেলর মেরকেলের তীব্র সমালোচনা করার পর বুধবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন তিনি। একদিন আগে জার্মানির এই দৈনিক এক প্রতিবেদনে সরকারের সমালোচনা করে লেখে, এই সঙ্কটে ক্ষমতাসীন নেতৃত্বের দেখা নেই, বক্তব্য নেই, এমনকি কোনও নেতৃত্বও নেই।
দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ২৯৬ জনে পৌঁছেছে। তবে প্রাদুর্ভাব শুরু হলেও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে দেখা যায়নি চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেলকে। বুধবার প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলন করে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন তিনি।
এর আগে, করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে জার্মানির সব সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার আহ্বান জানান দেশটির নাগরিকরা। কিন্তু জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জিনস স্প্যান এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে জার্মানির সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হলেও তা ফলপ্রসূ হবে না। ইতালির পর্যটকদের জার্মানিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে প্রতিবেশি অস্ট্রিয়া যে আহ্বান জানিয়েছে সেটিও প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।
জার্মানির রবার্ট কচ ইনস্টিটিউট বলছে, দেশটিতে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে এক হাজার ২৯৬ জন এবং মারা গেছেন ২ জন।
করোনাভাইরাস সঙ্কট দেশটির ফেডারেল সরকারি ব্যবস্থাকে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে। ১৬টি রাজ্যে বিভক্ত ফেডারেল সরকারের সিদ্ধান্ত রাজ্যগুলো মানতে বাধ্য নয়। এক হাজারের বেশি অংশগ্রহণকারীর যেকোনও অনুষ্ঠান বাতিল করতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী যে পরামর্শ দিয়েছেন সেটিও উপেক্ষা করার স্বাধীনতা আছে রাজ্যগুলোর।
দেশটির সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম ডাচল্যান্ডফাঙ্ককে দেয়া স্বাক্ষাৎকারে বুধবার সকালের দিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্প্যান বলেন, বার্লিনে আগামী শনিবার ইউনিয়ন বার্লিন এবং বায়ার্ন মিউনিখের ফুটবল ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত এখনও গ্রহণ করা হয়নি; এটা অত্যন্ত আশ্চর্যজনক। তার এই মন্তব্যের পর বার্লিনের স্থানীয় সরকার বলছে, ওই ফুটবল ম্যাচটি রুদ্ধদ্বার অনুষ্ঠিত হবে। পরে কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান স্প্যান।
ডেইলি বিল্ড জার্মানির ফেডারেল সরকার ব্যবস্থার সমালোচনা করে লিখেছে, পরিষ্কার কোনও ধরনের নির্দেশনা না আসায় মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ফেডারেল সরকারের যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে; সেটি করোনা সঙ্কটে বেরিয়ে এসেছে। তবে মেরকেল বলেন, ফেডারেল ব্যবস্থার অর্থ এই নয় যে কেউ তার দায়িত্ব পালন করা থেকে দূরে থাকবে।
সূত্র : রয়টার্স, এএফপি।