শুক্রবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক সতর্কবার্তায় বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলা হয়, ‘আপনাদের এর আগের মৃত্যুগুলো থেকে শেখা উচিত যে আপনারা মাথা ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হওয়ার মতো বিপদে পড়তে পারেন।’
অবশ্য এ সতর্কবার্তায় এটি উল্লেখ করা হয়নি, বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে গুলি করে হত্যার নির্দেশনা আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়া হয়েছে কি না। তবে সেই সতর্কবার্তা অগ্রাহ্য করেই আজ রাস্তায় নামেন বিক্ষোভকারীরা।
মাথায় গুলি করার জান্তার হুমকি উপেক্ষা করে আজ সকাল থেকেই বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসেন। ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়সহ বিভিন্ন শহরে শুরু হয় প্রচণ্ড বিক্ষোভ। অন্যান্য দিনের মতো রাজপথে ছিল জান্তা সরকারের সেনা–পুলিশও। তবে আজ তারা আরও কঠোর অবস্থান নেয়।
স্থানীয় অনলাইন সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউ–এর খবরে বলা হয়েছে, শনিবার দেশজুড়ে সেনা–পুলিশের গুলিতে অন্তত ১১৪ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে মান্দালয় শহরে শিশুসহ অন্তত ৪০ জন ও ইয়াঙ্গুনে ২৭ জন নিহত হন।
দালা নামক উপশহরে স্থানীয় থানার কাছে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন চারজন। এখানে কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। ইনসেইন শহরে গুলিতে নিহত হন তিনজন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন মিয়ানমারের অনূর্ধ্ব-২১ ফুটবল দলের সদস্য ছিলেন বলে জানা গেছে।
মধ্যাঞ্চলীয় মিংগিয়ান শহরে গুলিতে মারা গেছেন অন্তত দুই বিক্ষোভকারী। এখানে বিক্ষোভে অংশ নেন থু ইয়া জাউ। তিনি বলেন, ‘তারা (জান্তা) পাখির মতো নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে। তবে আমরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাব। জান্তা সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত এই বিক্ষোভ চলবে।’
প্রায় দুই মাস ধরে চলা জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে আজকের ১১৪ জনসহ চার শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হলেন। এই সময়ে আটক হয়েছেন প্রায় তিন হাজার। জান্তাবিরোধী আইনপ্রণেতাদের সংগঠন সিআরপিএইচের মুখপাত্র সাসা বলেছেন, আজকের দিনটি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জন্য লজ্জার।