বুধবার (২৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে দশটার দিকে যুক্তরাষ্ট্রে তার মৃত্যু হয়।
এক বিবৃতিতে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন প্রাণঘাতী ক্যান্সারে ভুগছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
বিবৃতিতে তার পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে সাহসিকতার সঙ্গে লড়াইয়ের পর মারা গেছেন মাইকেল কলিন্স। পরিবারের সদস্যদের সাহচর্য্যে জীবনের শেষদিনগুলো শান্তিতে কাটিয়েছেন তিনি।’
‘আমরা সবাই জানি, সাধারণ মানুষের তুলনায় তিনি কতো সৌভাগ্যবান ছিলেন । আমরা সবাই তার অভাব খুবই অনুভব করব।’
১৯৬৯ সালে নাসার যে নভোযানটিতে তিন দুঃসাহসী নভোযাত্রী চন্দ্র বিজয় অভিযানে সফল হয়েছিলেন তার অন্যতম সদস্য ছিলেন মাইকেল কলিন্স। অন্য দু’জন হলেন নীল আর্মস্ট্রং এবং এডউইন বাজ অলড্রিন।
তবে আর্মস্ট্রং ও অলড্রিন চাঁদের মাটিতে পা রাখলেও, কলিন্সের সেই সৌভাগ্য হয়নি। সেই অভিযানে তার দায়িত্ব ছিল নভোযান পরিচালনা করা।
১৯৩০ সালের ৩১ অক্টোবর ইতালির রাজধানী রোমে মাইকেল কলিন্স জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা জেমস ল্যাটন কলিন্স ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা। চার ভাইবোনের মধ্যে মাইকেল ছিলেন সবার ছোট।
১৯৪৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির সেন্ট অ্যালবান্স স্কুল থেকে স্নাতক শেষে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে যোগ দেন কলিন্স। সেখানে প্রশিক্ষণ শেষে দেশটির বিমান বাহিনীতে টেস্ট পাইলট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
১৯৬৩ সালে নভোযান জেমিনি ১০ এর অভিযাত্রী হিসেবে মাইকেল কলিন্সকে নির্বাচিত করে নাসা। সেটিই ছিল কলিন্সের প্রথম মহাকাশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা এবং কলিন্সের আগে বিশ্বে মাত্র তিন জন মানুষের মহাকাশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা হয়েছিল।
ছোটবেলা থেকেই মহাকাশ সম্পর্কে আগ্রহ ছিল মাইকেল কলিন্সের। বিশেষ ঝোঁক ছিল মঙ্গল গ্রহের প্রতি। ১৯৬৯ সালের অভিযানের পর বন্ধু মহলে প্রায়ই ঠাট্টা করে তিনি বলতেন, ‘নাসা আমাকে ভুল জায়াগায় পাঠিয়েছে, আমার যাওয়ার আগ্রহ ছিল আসলে মঙ্গল গ্রহে। ছোটবেলা থেকেই এই গ্রহটি সম্পর্কে পড়াশোনা করছি আমি।’
১৯৬৯ সালে নাসার সেই সফল চন্দ্র বিজয় অভিযানে চাঁদের মাটিতে প্রথম পা রাখা মানুষ নীল আর্মস্ট্রং মারা গেছেন ২০১২ সালে। এবার মারা গেলেন কলিন্স। সেই অভিযানের আর একজনই মাত্র বেঁচে আছেন,তিনি হলেন এডউইন বাজ অলড্রিন।