জরিপ অনুসারে, ২০২১ সালে ২৮ শতাংশ আমেরিকান বলেন, রিয়েল এস্টেটে ১০ বছর বা তারও বেশি সময়ের জন্য বিনিয়োগের জন্য পছন্দ তাদের। এদের মধ্যে প্রায় এক-চতুর্থাংশ বলেছেন, সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্ট বা সিডি হিসাবে নগদ বিনিয়োগগুলো তাদের শীর্ষে। এদের মধ্যে ১৬ শতাংশ বলেছিল, তারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করবে। মাত্র এক বছর আগে বাজারগুলোর তালিকায় শীর্ষে ছিল প্রায় ২৮ শতাংশ আমেরিকান। যারা শেয়ারবাজারকে তাদের পছন্দের বিনিয়োগ হিসাবে বেছে নিয়েছে।
ব্যাংকরেটের প্রধান আর্থিক বিশ্লেষক গ্রেগ ম্যাকব্রাইড বলেন, শেয়ারবাজার গত বছরের তুলনায় ভাল পারফরম্যান্স করেছে। খুবই অবাক করার বিষয় এটি। মহামারিতে বিনিয়োগকারীরা কীভাবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করবে সেবিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে। এছাড়া জরুরী অবস্থার জন্য নগদ অর্থ রাখা সম্পর্কে আরও আমেরিকানকে সচেতন করেছে তারা। শেয়ারবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদে সম্পদ অর্জন করতে বিপরীত কৌশল প্রয়োজন।
কেন শেয়ারবাজার স্থায়ী সম্পদের মাধ্যম?
এবিষয়ে আর্থিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়েক দশক ধরে নিয়মানুবর্তিতা ও ধৈর্য সহ স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করা অর্থ স্থায়ী সম্পদ গড়ে তোলার সেরা উপায়।
লাইফ্লেইডের একজন সার্টিফাইড আর্থিক পরিকল্পনাকারী রজার মা বলেন, “আমরা দীর্ঘমেয়াদে সম্পদ ধরে রাখার জন্য যা দেখেছি তা হচ্ছে স্টক মার্কেটের রিটার্নগুলো। সাধারণত অন্যান্য সম্পদ শ্রেণীর চেয়ে বেশি লাভ করা যাচ্ছে স্টক মার্কেট থেকে। অপরদিকে ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারে এবং বৈচিত্র্যময় ফ্যাশনে অংশ নেওয়া কখনই সহজ ছিল না। অবসর গ্রহণের পোর্টফোলিও বা অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী স্টক বিনিয়োগ পরিচালনা করাও বেশ সহজ হতে পারে। এছাড়াও তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে দেখা যৌগিক উপাদানগুলো তাত্পর্যপূর্ণভাবে সংরক্ষণ করবেন।
বোনাস বনাম নগদ:
ম্যাকব্রাইড বলেন, দীর্ঘমেয়াদে নগদ অর্থ সম্পদ তৈরির জন্য সাধারণত একটি ভালো বিনিয়োগের জায়গা না। জরুরী সঞ্চয় তহবিলের মতো কোনও কিছুর জন্য নগদ অর্থ থাকা অনেক বেশি সহায়ক। রিটার্নের অভাবের অর্থ হচ্ছে এটি কেবল দীর্ঘ সময় ধরে আপনার সম্পদ গড়ে তুলবে ।
তিনি আরও বলেন, এটি মুদ্রাস্ফীতিের কারণে, বা পণ্য ও পরিষেবাদি সময়ের সাথে আরও ব্যয়বহুল হয়ে যাওয়ার কারণে। যদি আপনি কেবল নগদ অর্থ সাশ্রয় করেন এবং শক্তিশালী রিটার্ন না দেখেন তখন মুদ্রাস্ফীতি বাড়ার মতো জিনিসগুলো কিনতে আপনাকে আরও বেশি পরিমাণে সঞ্চয় করতে হবে। করোনভাইরাস মহামারির পরে আমেরিকানদের জন্য এটি আগ্রহের শীর্ষে থাকতে পারে। কারণ মুদ্রাস্ফীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে এবং দাম বাড়ছে।
এছাড়াও তিনি বলেন, মুদ্রাস্ফীতি মোকাবেলার অন্যতম সেরা উপায় হল সম্পদগুলোতে বিনিয়োগ করা। এসব বিনিয়োগ আপনাকে শেয়ারবাজারের মতো উচ্চতর হারে রিটার্ন দেয়। অস্থিরতার ঝুঁকির বিনিময়ে বিনিয়োগকারীদের অনেক বেশি রিটার্ন দেওয়া হয়।
রিয়েল এস্টেট:
ম্যাকব্রাইড বলেন, অবশ্যই সম্পত্তির মালিকানা হল সম্পদ গড়ার একটি দুর্দান্ত উপায়। বিশেষত এমন এক ধরণের যা ভবিষ্যতের প্রজন্মের কাছে যেতে পারে। এই মুহূর্তে বিনিয়োগকারীরা রিয়েল এস্টেটের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারে। কারণ কয়েক বছর আগে কেনা বাড়িগুলোর মূল্য বাড়ছে। এছাড়া প্রাথমিক বাসস্থানগুলোতে বিনিয়োগতকারীরা অনেকে মিলিয়নপতি হয়েছে। তবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের চেয়ে রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও অনেক বেশি বাধা রয়েছে। রিয়েল এস্টেটে সামগ্রিক আয় অর্জন করতে অনেক বেশি ব্যয় করতে হয়।
রজার মা বলেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ শুরু করা খুব সহজ। কারণ আপনার ডাউন পেমেন্টের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হয় না। এছাড়া আপনি যদি রিয়েল এস্টেটের সংস্পর্শে যেতে চান, তবে রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলো বা রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগ ট্রাস্টগুলোতে বিনিয়োগ করে ভারসাম্যপূর্ণ পোর্টফোলিও দিয়ে এটি সম্পন্ন করতে হয়। শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারীদের রিয়েল এস্টেটের চেয়ে বিনিয়োগে আরও অনেক বেশি সুবিধা দেবে। যা কয়েক দশক ধরে সঞ্চয় ও বিনিয়োগের সম্পদ অর্জনের একটি উপায়।