শনিবার (১০ জুলাই) দেশটির নির্বাচন বোর্ড এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। নির্বাচন বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আবি আহমেদের প্রোসপারিটি পার্টি ৪১০টি আসনের মধ্যে ৪৩৬টি আসনে জয়লাভ করেছে। ফলে আরও পাঁচ বছরের জন্য তিনিই দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। খবর বিবিসির।
তবে নিরাপত্তা এবং অন্যান্য সমস্যার কারণে দেশটির এক পঞ্চমাংশ মানুষ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। যুদ্ধ-সংঘাতে বিপর্যস্ত টাইগ্রে অঞ্চলে ভোট অনুষ্ঠিত হয়নি। সেখানে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের মধ্যে জীবন কাটাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে আলাদাভাবে নির্বাচন করার কথা থাকলেও টাইগ্রেতে নির্বাচনের কোনও তারিখ এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি।
এদিকে, দেশটিতে আরও আগেই নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারির কারণে নির্বাচনের তারিখ পেছাতে হয়েছিল। নির্বাচনে আশানুরূপ ফল পাওয়ার পর এক টুইটবার্তায় নোবেল জয়ী আবি আহমেদ এই নির্বাচনকে ‘ঐতিহাসিক নির্বাচন’ বলে উল্লেখ করেছেন।
আগামী অক্টোবরে নতুন সরকার গঠনের কথা রয়েছে। তবে ইতোমধ্যেই নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করেছে যে, তাদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সরকারি অভিযানের কারণে তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে যে পরিকল্পনা ছিল তা ভেস্তে গেছে।
নির্বাচন নিয়ে বেশ কিছু অঞ্চল থেকেই অভিযোগ এসেছে। এদিকে, রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিচালিত ইথিওপিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন (ইএইচআরসি) জানিয়েছে, বিভিন্ন স্থানে পর্যবেক্ষণ করে তারা কোনও গুরুতর বা ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা দেখতে পাননি।
এর আগে গত মে মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন অভিযোগ করেছিল যে, নির্বাচনের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থ ইথিওপিয়া। ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর এই নির্বাচন ছিল আবি আহমেদের জন্য প্রথম নির্বাচনী পরীক্ষা।
দেশের দুর্নীতি দমন, রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি, মন্ত্রিসভায় আরও বেশি সংখ্যক নারীকে নিযুক্ত করা এবং প্রতিবেশী এরিত্রিয়ার সঙ্গে শান্তি স্থাপনের কারণে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন আবি আহমেদ। ১৯৯৮-২০০০ সাল পর্যন্ত এই প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে যুদ্ধ-সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।
২০১৯ সালে শান্তিতে নোবেল জয় করেন আবি আহমেদ। কিন্তু তার এক বছর পরেই তিনি তার নিজ দেশে সামরিক অভিযান শুরু করেন। তিনি উত্তরাঞ্চলীয় টাইগ্রে অঞ্চলে সেনা মোতায়েন করেন। ওই অঞ্চলে সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।