মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) সকালে দেশটির প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারি তাকে নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছেন। দেশটির জাতীয় দৈনিক দ্য হিমালয়ান টাইমসের বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে
নেপালের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭৬ ধারার ৫ নম্বর উপধারা অনুযায়ী তাকে প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
এই নিয়ে ৫ম বারের মতো নেপালের প্রধানমন্ত্রী হলেন ৭৫ বছর বয়সী শের বাহাদুর। ১৯৯৫ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি এবং এই পদে ছিলেন ১৯৯৭ সালের মার্চ পর্যন্ত।
তারপর ২০০১ সালের জুলাই থেকে ২০০২ সালের অক্টোবর দ্বিতীয় দফা, ২০০৪ সালের জুন থেকে ২০০৫ এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তৃতীয় দফা এবং ২০১৭ এর জুন থেকে ২০৮ এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চতুর্থ দফায় নেপালের প্রধানমন্ত্রী হন শের বাহাদুর দিউবা।
নেপালের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে নিয়োগ পেয়েছেন। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, এই পদ পাকাপোক্ত করতে হলে তাকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের আয়োজন করতে হবে এবং সেই ভোটে জিততে হবে।
নেপালের রাজনীতি বিশ্লেষকরা অবশ্য বলেছেন, পার্লামেন্টে নেপালি কংগ্রেস পার্টির যে পরিমাণ আসন বর্তমানে রয়েছে এবং অন্যান্য দলের এমপিদের কাছে তার যে পরিমাণ গ্রহণযোগ্যতা, তাতে সহজেই আস্থা ভোটের বৈতরণী পার হতে সক্ষম হবেন শের বাহাদুর।
গত কয়েকমাস ধরে নেপালের পার্লামেন্টে অচলাবস্থা চলছে। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নেপালের রাজনৈতিক দল কমিউনিস্ট ইউনিফাইড মার্কসিস্ট লেনিনিস্ট (ইউএমএল) পার্টির প্রধান কে পি শর্মা ওলির দল থেকে প্রায় দুই ডজনেরও বেশি এমপি নেপালি কংগ্রেস পার্টিতে যোগ দেওয়ার মধ্যে দিয়ে এই অচলাবস্থার সূত্রপাত হয়।
এর প্রেক্ষিতে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের ডাক দিয়েছিলেন ওলি, কিন্তু সেখানেও পরাজিত হন তিনি। ফলে সংকট আরও ঘনীভূত হয়।
এই পরিস্থিতিতে নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্দারিকে পার্লামেন্ট বিলোপ ঘোষণা করার পরামর্শ দেন ওলি। প্রেসিডেন্ট সেই পরামর্শ মেনেও নিয়ে পার্লামেন্ট বিলোপ ঘোষণা করেন, কিন্তু তারপরই তার এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় নেপালি কংগ্রেস পার্টি।
সোমবার (১২ জুলাই) নেপালের প্রধান বিচারপতি কলেন্দ্র শমশের রানা এক আদেশে বলেন- মঙ্গলবার বিকাল ৫ টার মধ্যে শের বাহাদুর দিউবাকে নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের পর বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে শের বাহাদুর বলেছিলেন, ‘সর্বোচ্চ আদালত দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছেন। এখন পার্লামেন্টের ৫ টি রাজনৈতিক দলের সদস্যদের সমন্বয়ে একটি জোট সরকার গঠনের কাজ শুরু হবে।’