বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে।
এতে বলা হয়, এ প্যাকেজের আওতায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হোটেল, মোটেল, থিম পার্কে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এক বছর মেয়াদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ দেবে। গ্রাহক পর্যায়ে সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৮ শতাংশ। তবে সুদ বা মুনাফার অর্ধেক অর্থাৎ ৪ (চার) শতাংশ ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করবে আর অবশিষ্ট ৪ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে দেবে। এ প্যাকেজের আওতায় সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, এ প্যাকেজের আওতায় ঋণ অনুমোদন ও বিতরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান নীতিমালাসহ ব্যাংকের নিজস্ব ঋণ ও বিনিয়োগ নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে। সরকার ভর্তুকি বাবদ প্রদত্ত সুদ বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় এর একাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে প্রদান করবে।
এ প্যাকেজের আওতায় ঋণ/বিনিয়োগ প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিটি ব্যাংক তাদের নিজস্ব সীমা নির্ধারণ করে ওই সীমার ওপর ভিত্তি করে ঋণ দেবে। এই সীমা আগামী ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগকে জানাতে হবে। ব্যাংকগুলোর চাহিদা ও তহবিলের পর্যাপ্ততার ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চূড়ান্ত সীমা নির্ধারণ করে দেবে এবং সে মোতাবেক ব্যাংক ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
এ প্যাকেজের ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ এক বছর। ঋণ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক লেনদেন সন্তোষজনক হলে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণ সুবিধাটি নবায়ন করা যাবে। প্যাকেজের আওতায় সুদ বাবদ ভর্তুকি এক বছরের জন্য দেওয়া হবে।
যেসব হোটেল, মোটেল, থিম পার্ক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ইতোপূর্বে কোনো সুবিধা গ্রহণ করেনি তাদের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের লক্ষ্যে এ প্যাকেজের আওতায় ঋণ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।
ঋণ গ্রহণে ইচ্ছুক আবেদনকারী যে ব্যাংকের মাধ্যমে বর্তমানে লেনদেন করে থাকে সে ব্যাংকের মাধ্যমে এ প্যাকেজের আওতায় ঋণ সুবিধা পাবে। যেসব প্রতিষ্ঠান একাধিক ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করে সেসব প্রতিষ্ঠান লেনদেনকৃত ব্যাংকসমূহের যেকোনো একটি ব্যাংকের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে অন্য কোন ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ সুবিধা গ্রহণ করেনি মর্মে প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে।
প্যাকেজটির ঋণ ও বিনিয়োগের ওপর ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে (মার্চ, জুন, সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর) আরোপিত সুদ অংশ ঋণগ্রহীতা প্রদেয় (৪ শতাংশ) সে অংশ পরবর্তী মাসের ১০ তারিখের মধ্যে পরিশোধিত হলে সরকারের নিকট হতে সুদের বিপরীতে অবশিষ্ট ৪(চার) শতাংশ ভর্তুকি হিসেবে ব্যাংক প্রাপ্য হবে। ঋণ গ্রহীতা সময়মত সুদ পরিশোধ না করলে ব্যাংক সরকারি ভর্তুকি সুদ পাবে না। ফলে ঋণগ্রহীতাকে পুরো সুদ (৮ শতাংশ) বহন করতে হবে।
এ প্যাকেজের আওতায় ঋণ দেওয়ার জন্য ব্যাংকের তারল্য সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে বিতরণ করা ঋণের ৫০ শতাংশ অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট হতে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে ব্যাংক।