চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, নতুন করে যারা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন তার মধ্যে ৩০ জন স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন। গতদিন এই সংখ্যাটা ছিল ২১। তবে এই সময়ের মধ্যে নতুন করে কারো মৃত্যু হয়নি।
গতদিন নতুন আক্রান্তদের ৩০ জন স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হলেও বাকি ২৫ জন অন্য কোনো দেশে আক্রান্ত হয়েছেন। স্থানীয়ভাবে শনাক্ত রোগীর বেশিরভাগ জিয়াংসু প্রদেশের বাসিন্দা বলেও জানিয়েছে চীনের দ্য ন্যাশনাল হেলথ কমিশন।
জিয়াংসু প্রদেশের রাজধানী শহর নানজিং থেকেই এখন চীনে নতুন করে কোভিডের প্রকোপ শুরু হয়েছে। এই প্রকোপ ছড়াচ্ছে করোনার ডেল্টা ধরন। চলতি মাসের শুরুতে নানজিং বিমানবন্দরের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মাধ্যমে সেখানে ডেল্টার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন করে শুরু হওয়া এই প্রকোপের নেপথ্যে রয়েছে অতিসংক্রামত করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। তারা বলছেন যে, বিমানবন্দরটি খুব ব্যস্ততম হওয়ার কারণে অতিসংক্রামক এই ধরনটির বিস্তার আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে এই প্রকোপ শুধু নানজিং শহরেই আটকে নেই। জিয়াংশু প্রদেশের অন্যান শহর ছাড়াও নতুন করে শুরু হওয়া এই প্রকোপ ছড়িয়েছে চীনের রাজধানী শহর বেইজিংসহ আনহুই, শিচুয়ান, লিয়াওনিং, গুয়ানদং ও হুনানের মতো প্রদেশগুলোতেও।
নানজিং শহরে প্রথম শনাক্ত হওয়া কোভিড প্রাদুর্ভাব দেশটির পাঁচ প্রদেশ ও রাজধানী শহর বেইজিংয়ে ছড়িয়ে পড়ার পর চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম নতুন করে শুরু হওয়া প্রকোপকে উহানের পর সবচেয়ে বিস্তৃত সংক্রমণ বলে অভিহিত করেছে।
জিয়াংসুর অন্যতম বৃহৎ শহর সুঝৌ শনিবার খেলার আয়োজন হয় এমন সব ধরনের স্থাপনা বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কেননা এসব স্থাপনায় খেলার সময় জিয়াংসুর অন্য শহরে ভাইরাসটির প্রকোপ ছড়ানো ব্যক্তিরা শনাক্ত হওয়ার এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রকোপ শুরু হয়েছে বেইজিংয়ে। ফলে গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে থাকা শিক্ষার্থীদের বলা হয়েছে ১৫ আগস্ট থেকে আবার পাঠদান শুরু হওয়ার অন্তত ১৪ দিন আগে তারা যেন চলে আসে। এতে করে বাইরের প্রদেশ থেকে বেইজিংয়ে আসা শিক্ষার্থীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা যাবে।
সম্প্রতি স্বরণকালের সবচেয়ে প্রাণঘাতী বন্যার কবলে পড়া হেনান প্রদেশে শহর ঝেংঝৌয়ের কর্তৃপক্ষ শনিবার ঘোষণা দিয়েছে যে এখন থেকে শহর ছাড়তে চাইলে কোভিড পরীক্ষায় নেগেটিভ হতে হবে। অনেক মাস পর সেখানে উপসর্গবিহীন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
২০১৯ সালে চীনের উহান থেকে প্রথম করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে। তারপর বৈশ্বিক মহামারির রূপ নেয়। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে প্রথম থেকেই কঠোর অবস্থান নিয়ে চীন এর রাশ টেনে ধরতে অনেকটা সফলও হলেও আবার এর প্রকোপ শুরু হয়েছে।