চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেও বিশ্ব বাণিজ্যের টেকসই প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু ডব্লিউটিও বলছে, টিকা উৎপাদন প্রয়োজনের তুলনায় কম হওয়ায় বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে টিকা বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের ও উন্নয়নশীল দেশগুলো উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে আছে।
এদিকে মহামারির সময়ে বিশ্ব বাণিজ্যের জগতে কিছু পরিবর্তন এসেছে। ডব্লিউটিওর ট্রেড পলিসি রিভিউ বডির আলোচনায় বলা হয়েছে, ২০২০ সালের মার্চের পর সদস্য দেশগুলো বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মহামারি–সম্পর্কিত ৩৮৪টি ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশই ছিল বাণিজ্য সহজীকরণ সংক্রান্ত, বাকিগুলো বাণিজ্য প্রতিবন্ধক আখ্যা দেওয়া যেতে পারে। মহামারি শুরুর পরপর যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তার বেশ কিছু এখনো রয়ে গেছে (মে ২০২১ পর্যন্ত)।
যেসব প্রতিবন্ধকতা আরোপ করা হয়েছে, তার মধ্যে ৮৪ শতাংশ রপ্তানিবিষয়ক। বাণিজ্য সহজীকরণে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ৬০ শতাংশই হচ্ছে আমদানি শুল্ক ও কর প্রত্যাহার বা হ্রাস–সংক্রান্ত। সদস্য দেশগুলো ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই), স্যানিটাইজার, জীবাণুনাশক, চিকিৎসাসামগ্রী ও ওষুধের ওপর শুল্ক হ্রাস করেছে। অনেক দেশ আবার অক্সিজেন ও অক্সিজেন ক্যানিস্টার জাতীয় সামগ্রীর ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করেছে।
অন্যদিকে মহামারি–সংক্রান্ত যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তার অনেকগুলোই আবার প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বা এখনো হচ্ছে। ২০২১ সালের মে মাসের মধ্যভাগ পর্যন্ত কোভিড-১৯–সংক্রান্ত বাণিজ্য সহজীকরণের ২১ শতাংশ এবং কোভিড-১৯–সংক্রান্ত বাণিজ্য বিধিনিষেধের ৫৪ শতাংশ বাতিল করা হয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার হিসাব অনুসারে, বাণিজ্য সহজীকরণে গৃহীত উদ্যোগের যেগুলো এখনো বলবৎ আছে, তার আর্থিক পরিমাণ ১৭ হাজার ৯৬০ কোটি ডলার এবং যেসব বিধিনিষেধ এখনো আছে, সেগুলোর আর্থিক পরিমাণ ১০ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত বিধিনিষেধের চেয়ে বাণিজ্য সহজীকরণের পরিসর বড়।
ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো-ইওয়েলা প্রতিবেদনে বলেছেন, দেখা যাচ্ছে, সদস্য দেশগুলোর নীতিগত অবস্থানের কারণে ক্ষতিবৃদ্ধি হয়নি। তবে মহামারির কারণে আরোপিত কিছু বিধিনিষেধ এখনো আছে। সেগুলো যেন স্বচ্ছ ও সাময়িক হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারি মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশে এখনো নানা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ডব্লিউটিওর ১০৬টি সদস্যদেশ এবং ৪টি পর্যবেক্ষক দেশে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ ব্যবস্থা নিয়েছে। ২০০৭-০৮ সালের আর্থিক সংকটের সময় এত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।