ইন্টারনেট ওয়াচডগ নেটব্লক্সের এক আনুমানিক হিসাবে বলছে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, মেসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপের আয়ের ক্ষতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতি হারিয়েছে ঘণ্টায় ১৬ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা (১ ডলার=৮৫ টাকা ধরে) সেই সঙ্গে যেহেতু সমস্যাটি ছয় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলেছে, তাই বিশ্ব অর্থনীতিতে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ক্ষতি ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। কেবল যুক্তরাষ্ট্রে নেটব্লক্সের হিসাবে অন্তত ২৩ কোটি ২০ লাখ ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
ফেসবুকের শেয়ারের দৈনিক প্রায় ২০০ কোটি সক্রিয় লেনদেনকারী আছে। বিজ্ঞাপন পরিমাপ সংস্থা স্ট্যান্ডার্ড মিডিয়া ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ডিজিটাল বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক। এ সমস্যার কারণে প্রতি ঘণ্টায় আনুমানিক ৫ লাখ ৪৫ হাজার ডলারের বিজ্ঞাপনের আয় হারিয়েছে।
বেশ কয়েকটি দেশের ব্যবহারকারীরা প্রথমে তাঁদের দেশে সম্ভাব্য ফিল্টারিং নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, অন্যরা সন্দেহ করেছিলেন যে তাঁদের নিজস্ব ইন্টারনেট সংযোগ কেটে দেওয়া হতে পারে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই যোগাযোগের জন্য টুইটার, টেলিগ্রামসহ বিকল্প প্ল্যাটফর্মে ভিড় করেছেন।
গত মাসের মাঝামাঝি থেকে ফেসবুকের শেয়ারের দর কমছে। ফেসবুকের সাবেক কর্মী ফ্রান্সেস হাউগেন দাবি করেন, তাঁর ফাঁস করা নথিগুলোতে প্রমাণিত হয় ফেসবুক বরাবরই নিরাপত্তার চেয়ে প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্ব দেয়। মার্কিন টিভি চ্যানেল সিবিএসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে অংশ নেন ফেসবুকের পণ্য ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত থাকা সাবেক কর্মী ফ্রান্সেস হাউগেন।
এর আগে অনেকবারই তিনি পরিচয় প্রকাশ না করে ফেসবুকের তথ্য ফাঁস করেন। এবার প্রথমবারের মতো সামনে এসে এসব কথা জানান তিনি। সিবিএসের ‘সিক্সটি মিনিট’ নামের অনুষ্ঠানে হাউগেন জানান, ফেসবুকের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়েই এ বছর প্রতিষ্ঠানটিতে আর কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ফেসবুক ছাড়ার আগে বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ নথি সঙ্গে নিয়ে যান তিনি।
ফ্রান্সেস হাউগেনের এ দাবির পর গত মাসের মাঝামাঝি থেকে ১৫ শতাংশ দর কমেছে ফেসবুকের। আবার গতকালের ঘটনায় কোম্পানির শেয়ারের দর মাত্র কয়েক ঘণ্টায় কমেছে হু হু করে। সব মিলিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে ফেসবুক ২০ শতাংশ দর হারিয়ে।
গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত (বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত) ফেসবুক এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত সার্ভিস ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারের সার্ভার ডাউন হয়ে যায়। মুঠোফোন বা কম্পিউটার থেকে এসব সার্ভিসে ঢুকতে পারা যায়নি এ সময়।