ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে কাজাখস্তানের প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয়ের ফৌজদারি মামলার প্রধান সেরিক শালাবায়েভ বলেন, বিক্ষোভ-সহিংসতায় দেশে মোট ২২৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯ জন নিরাপত্তা ও সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, প্রাণ হারানো মানুষের এই সংখ্যার মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত বেসামরিক নাগরিক এবং সশস্ত্র ‘দুর্বৃত্তরা’ও রয়েছেন। তবে সন্ত্রাসবাদের ভেতরে বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণ হারানোর বিষয়টিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করেন শালাবায়েভ।
চলমান জরুরি অবস্থার মধ্যেই নিহতদের মরদেহ সারা দেশে মর্গে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে কাজাখ প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয়ের ফৌজদারি মামলার এই প্রধান বলেন, প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা পরবর্তীতে হালনাগাদ করা হতে পারে।
এর আগে বিক্ষোভ ও সহিংসতার মধ্যে সাধারণ বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে ৪৪ জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছিল কাজাখস্তান। নিহতদের মধ্যে ২৬ জন সশস্ত্র অপরাধী এবং ১৮ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য বলে জানিয়েছিল কাজাখ কর্তৃপক্ষ।
এরপর গত সপ্তাহে সরকারি টেলিগ্রাম চ্যানেলে নিহতের সংখ্যা ১৬৪ বলে জানানো হয়। তাদের মধ্যে দেশটির প্রধান শহর আলমাতিতেই নিহত হয়েছেন ১০৩ জন। দেশটির বৃহত্তম এই শহরে সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
সেসময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, প্রাণঘাতী সহিংসতার পর প্রাথমিকভাবে ১৯৮ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া সহিংসতায় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকে হামলা চালিয়ে লুটপাট করা হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা প্রায় ৪০০ যানবাহন ধ্বংস করেছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার নতুন বছর প্রথম দিনেই কাজাখস্তানে জ্বালানির দাম এক লাফে দ্বিগুণের বেশি বাড়ানো হয়। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ওই দিনই মানজিস্তাউ শহরে বিক্ষোভ শুরু করেন সাধারণ মানুষ। দ্রুত সেই বিক্ষোভ দেশের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। ক্রমে তা গণবিদ্রোহের চেহারা নেয়। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করেন।
মূলত কাজাখস্তানে অনেকেই এলপিজিতে গাড়ি চালান। সরকার এতোদিন দাম নিয়ন্ত্রণ করে রাখায় গ্যাসোলিনের চেয়ে এলপিজিতে গাড়ি চালানো সস্তা ছিল। সরকার সেই এলপিজির দাম বাড়ানোয় প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়। যা একপর্যায়ে সহিংস হয়ে ওঠে।