প্রতিবেদন অনুসারে চলতি মৌসুমের জন্য খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার পূর্বাভাস ২১ লাখ টন বাড়িয়েছে এফএও। গত মৌসুমের তুলনায় চলতি বছরের জন্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৯ কোটি ৩০ লাখ টন। চলতি মাসে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে আর্জেন্টিনা ও অস্ট্রেলিয়ায় গম উৎপাদনের পূর্ববর্তী প্রাক্কলন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে রাশিয়ান ফেডারেশন ও ইউক্রেনের গম উৎপাদন পূর্বাভাসও কিছুটা বাড়িয়েছে এফএও।
অন্যদিকে চলতি মৌসুমে মোটা দানার শস্য উৎপাদন পূর্বাভাস আগের তুলনায় কিছুটা কমিয়েছে এফএও। এ সময় মোটা দানার শস্য উৎপাদন পূর্বাভাস দশমিক ২ শতাংশ কমিয়ে আনে সংস্থাটি। বুরকিনা ফাসো, নাইজার ও যুক্তরাষ্ট্রে সরগুম (এক ধরনের মোটা দানাদার শস্য) উৎপাদন কমে আসার সম্ভাবনায় নেতিবাচক পূর্বাভাস তুলে ধরেছে এফএও। যদিও এ সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন অঞ্চল, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রে ভুট্টার উৎপাদন বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে এফএও। উৎপাদন কমার পূর্বাভাস সত্ত্বেও গত মৌসুমের তুলনায় চলতি মৌসুমে মোটা দানার শস্যের বৈশ্বিক উৎপাদন ১ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি হবে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে। চলতি মৌসুমে মোটা দানার শস্যের বৈশ্বিক উৎপাদন দাঁড়াবে ১৫০ কোটি ১০ লাখ টন।
ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশনের পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০২১ সালের জন্য চালের বৈশ্বিক উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়েছে ৫১ কোটি ৭১ লাখ টন, যা ২০২০ সালে উৎপাদিত চালের রেকর্ড পরিমাণের চেয়ে দশমিক ৭ শতাংশ বেশি এবং ডিসেম্বরে করা প্রাক্কলনের তুলনায় ১৩ লাখ টন কম। সংশোধিত প্রাক্কলনটি মূলত চীনের চাল উৎপাদন কমে আসার সরকারি অনুমানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়, একই সঙ্গে নাইজেরিয়া ও নেপালে চাল উৎপাদন হ্রাসের চিত্রও এতে প্রভাব রেখেছে। তবে এ সময় জাপান ও ভিয়েতনামের উৎপাদন পূর্বাভাস কিছুটা বেড়েছে।
২০২০-২১ মৌসুমের তুলনায় চলতি মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক ব্যবহার পূর্ববর্তী মৌসুমের তুলনায় ১ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়াবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এফএও। ফলে এ মৌসুমে খাদ্যশস্যের ব্যবহার দাঁড়াবে ২৮০ কোটি ৫০ লাখ টন। যদিও ডিসেম্বরে এফএওর প্রাক্কলন অনুসারে চলতি মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক ব্যবহার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল ২৮০ কোটি ৯০ লাখ টন। ২০২২ সালের শেষ নাগাদ খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক মজুদ দাঁড়াবে ৮২ কোটি ৪৩ লাখ টন। ডিসেম্বরে প্রাক্কলিত মজুদের পরিমাণ ছিল ৮২ কোটি ২১ লাখ টন, যা বর্তমান প্রাক্কলনের তুলনায় ২২ লাখ টন কম।
এফএওর নতুন পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০২১-২২ মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক বাণিজ্য দাঁড়াবে রেকর্ড ৪৮ কোটি ১০ লাখ টন। ডিসেম্বরের প্রাক্কলন অনুযায়ী চলতি মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৪৮ কোটি টন, যা বর্তমান প্রাক্কলনের তুলনায় ১০ লাখ টন কম ও গত মৌসুমের তুলনায় দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে চলতি মৌসুমে মোটা দানার খাদ্যশস্যের বাণিজ্য গত মৌসুমের তুলনায় ১ দশমিক ৫ শতাংশ কমার পূর্বাভাস দিয়েছে এফএও। ২০২১-২২ মৌসুমে মোটা দানার খাদ্যশস্যের বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৩ কোটি ৫৩ লাখ টন, পূর্ববর্তী মৌসুমে মোটা দানার খাদ্যশস্যের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৩ কোটি ৮৯ লাখ টন।