উদ্দেশ্য আমদানি কমানোর মাধ্যমে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে যে ব্যবধান তৈরি হয়েছে, তা কমিয়ে আনা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মধ্যে ১২০ কোটি টন কয়লা উত্তোলনের পরিকল্পনা করেছে দেশটি। বর্তমানে ভারত যে পরিমাণ কয়লা উত্তোলন করে, এটি তার চেয়ে ৭৫ শতাংশ বেশি। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে ভারতের কয়লাবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভারত সরকার এরই মধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম বাণিজ্যিক নিলাম। রেভেনিউ শেয়ার ম্যাকানিজমের মাধ্যমে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া উত্তোলন বাড়াতে ও নিলাম চালু রাখতে সিঙ্গেল উইন্ডো ক্লিয়ারেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্ল্যাটসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির সরকার স্থানীয় কয়লা উত্তোলন সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে নতুন নতুন প্রকল্পের অনুমোদন দিচ্ছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে যেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা রয়েছে, সেগুলো সম্প্রসারণও করা হচ্ছে।
এর আগে ভারতের রাষ্ট্রমালিকানাধীন কোম্পানি কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড ২০২৪ সালের মধ্যে ১০০ কোটি টন কয়লা উত্তোলন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি একটি উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা। কারণ বেসরকারি কোম্পানিগুলোর মাঝে বাণিজ্যিক নিলাম ও উত্তোলন নিয়ে আগ্রহ খুবই কম।
এদিকে কয়লাবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, গত বছর ক্যাপটিভ ব্লকগুলোকে বাড়তি কয়লা বিক্রির অনুমতি দেয়ার পর দেশের কয়লা উত্তোলন সক্ষমতা বেড়েছে। এ কারণে ২০২১ সালের এপ্রিল-নভেম্বর পর্যন্ত জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন ৯ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। উত্তোলনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৪ কোটি ৭৫ লাখ ৪০ হাজার টনে। ২০২০ সালের একই সময় উত্তোলনের পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার ৫ লাখ ৫০ হাজার টন।
২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতে কয়লার চাহিদা ৯০ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার টন ছিল। স্থানীয় সরবরাহের পরিমাণ ছিল ৬৯ কোটি ৮ লাখ ৯০ হাজার টন। এ সময় দেশটি আমদানি করে ২১ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টন।
মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে ধাতব কয়লার পর্যাপ্ত মজুদ নেই, প্রাপ্যতাও কম। ২০২১ সালের অক্টোবরে মজুদ নজিরবিহীন কমে গিয়েছিল। এসব কারণে সহসাই চাহিদা ও সরবরাহের ব্যবধান কমিয়ে আনা সম্ভব হবে না।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্লাটসের তথ্য বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ২০২০ সালে ফ্রি অন বোর্ড চুক্তিতে (এফওবি) ইন্দোনেশিয়ান কয়লার দাম ছিল টনপ্রতি ২৯ ডলার ৪৬ সেন্ট। অথচ গত বছর দাম বেড়ে ৬৭ ডলার ৭০ সেন্টে উন্নীত হয়। অস্ট্রেলিয়ান কয়লার দাম ৪৪ ডলার ৭৪ সেন্ট থেকে বেড়ে ৮৩ ডলার ২৫ সেন্টে পৌঁছে। দক্ষিণ আফ্রিকার কয়লার দাম ৪৮ ডলার ৩০ সেন্ট থেকে বেড়ে ৯৬ ডলার ৪৮ সেন্টে পৌঁছে।
জ্বালানি পণ্যটির ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে গত বছরের এপ্রিল-নভেম্বর পর্যন্ত ভারতের কয়লা আমদানি কমেছে। আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ৭১ লাখ ৪০ হাজার টনে। ২০২০ সালের একই সময় আমদানি করা হয় ১৬ কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার টন। এক বছরের ব্যবধানে আমদানি ১১ দশমিক ১৩ শতাংশ কমেছে।