শনিবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাজুসের পরিচালক এনামুল হক খান দোলন। এতে উপস্থিত ছিলেন বাজুসের যুগ্ম সম্পাদক বিধান মালাকার, পরিচালক ইকবাল উদ্দিন, সদস্য স্বপন চন্দ্র কর্মকার, বিকাশ ঘোষ, বাবুল রহমান ও নজরুল ইসলাম। সারা দেশে জুয়েলারি শিল্পের বাজারে অস্থিরতা, চলমান সংকট ও সমস্যা, দেশি-বিদেশি চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য অর্থ পাচার ও চোরাচালান বন্ধ এবং কাস্টমসসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জোরালো অভিযানের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন করে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন অ্যান্টিস্মাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্ট।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, দেশে চলমান ডলার সংকটে এই ৭৩ হাজার কোটি টাকার অর্থ পাচার ও চোরাচালান বন্ধে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে অব্যাহতভাবে মার্কিন ডলারের মাত্রাতিরিক্ত দাম ও সংকটসহ অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার ঊর্ধ্বমুখী দাম এবং বেপরোয়া চোরাচালানের ফলে বহুমুখী সংকটে পড়েছে দেশের জুয়েলারি শিল্প। সোনার বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে দিয়েছে চোরাকারবারিদের দেশি-বিদেশি সিন্ডিকেট। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রতিনিয়ত স্থানীয় পোদ্দার বা বুলিয়ন বাজারে সোনার দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। পোদ্দারদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সোনার পাইকারি বাজার। পোদ্দারদের সঙ্গে চোরাকারবারিদের সিন্ডিকেটের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মূলত এই চোরাকারবারিদের একাধিক সিন্ডিকেট বিদেশে সোনা পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে সোনার বাজারে অস্থিরতার নেপথ্যে জড়িত চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে কাস্টমসসহ দেশের সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জোরালো অভিযান ও শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এক্ষেত্রে বাজুসের প্রস্তাব হলো—সোনা চোরাকারবারিদের চিহ্নিত করতে বাজুসকে সম্পৃক্ত করে পৃথকভাবে সরকারি মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে। পাশাপাশি চোরাকারবারিদের দমনে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে আরো কঠোর আইন করতে হবে। এছাড়া ব্যাগেজ রুলের আওতায় সোনার বার ও অলংকার আনার সুবিধা অপব্যবহারের কারণে ডলার সংকট ও চোরাচালানে কী প্রভাব পড়ছে, তা জানতে বাজুসকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরকে সমীক্ষা পরিচালনার প্রস্তাব করেন তারা। চোরাচালান প্রতিরোধ করতে গিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্যদের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া সোনার মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশ সংস্থাগুলোর সদস্যদের মধ্যে পুরস্কার হিসেবে প্রদানের অনুরোধ করেন নেতারা। এছাড়া হলমার্ক ব্যতীত কোনো অলংকার বিক্রি করা যাবে না। অনুমতি পেয়েও যেসব প্রতিষ্ঠান সোনা আমদানি করছে না তাদের লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাজুস।