মূল্য বৃদ্ধির দিক থেকে স্বর্ণের তুলনায় রুপা যেমন কয়েকগুণ এগিয়ে রয়েছে, তেমনি সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দরপতনের হারেও এগিয়ে রয়েছে রুপা। শেষ কার্যদিবসে স্বর্ণের মূল্য কমেছে ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আর রুপার মূল্য কমেছে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
মহামারি করোনার প্রকোপের মধ্যে চলতি বছরের শুরু থেকেই স্বর্ণের মূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তবে জুলাই মাসের শেষ অর্ধ থেকে স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধির নতুন হাওয়া লাগে। এতে সৃষ্টি হয় একের পর এক রেকর্ড। এতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের মূল্য ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুই হাজার ডলারে পৌঁছেছে।
করোনা মহামারির প্রকোপের মধ্যে রুপার মূল্যেও বড় উত্থান হয়েছে। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে রুপার মূল্য বাড়ার ক্ষেত্রে তেমন চমক ছিল না। কিন্তু জুলাই মাসের শেষ অর্ধে এতে হঠাৎ করেই হু হু করে বাড়তে থাকে রুপার মূল্য। এতে ২০১৩ সালের মার্চে পর রুপার মূল্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
চলতি বছরের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে উত্তাপ ছড়ানো স্বর্ণের দাম জুলাই মাসের শেষ অর্ধে এসে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকায় মূল্যবান ধাতুটি ২৭ জুলাই অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ মূল্যে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে। তবে এখানেই স্বর্ণের দাম বাড়ার প্রবণতা থেমে থাকেনি। গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো দুই হাজার ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করে সোনা।
দফায় দফায় দাম বেড়ে চলতি সপ্তাহে প্রতি আউন্স স্বর্ণের মূল্য ২ হাজার ৭৪ ডলারে উঠে। তবে শুক্রবার ৩৪ দশমিক ১০ ডলার কমে প্রতি আউন্স স্বর্ণের মূল্য ১ হাজার ৩৪ দশমিক ৮০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এই দরপতনের পরও সপ্তাহের ব্যবধানে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ এবং মাসের ব্যবধানে ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ মূল্য বেড়েছে। এর মাধ্যমে চলতি বছরে প্রতি আউন্স স্বর্ণের মূল্য ৫০৬ দশমিক ৫৫ ডলার বা ৩৩ দশমিক ১৫ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে বছরের শুরুর দিকে স্থিতিশীল থাকলেও জুলাই মাসের শেষ অর্ধে স্বর্ণের দেখানো পথে হাঁটতে শুরু করে রুপা। হু হু করে মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি আউন্স রুপার মূল্য ২৮ দশমিক ২৬ ডলারে পৌঁছেছে গেছে। এর মাধ্যমে ২০১৩ সালের মার্চের পর প্রতি আউন্স রুপার মূল্য আবার ২৮ ডলার ছাড়িয়ে গেল। সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছাতে চলতি বছর প্রতি আউন্স রূপার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ দশমিক ২৫ ডলার বা ৫৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
এর আগে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে ৬ আগস্ট থেকে দেশের বাজারেও স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন মূল্য অনুযায়ী, ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের ভরিপ্রতি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের মূল্য চার হাজার ৪৩২ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৭ হাজার ২১৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৭৪ হাজার ৬৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৫ হাজার ৩১৮ টাকায় ও সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি স্বর্ণ বিক্রি ৫৪ হাজার ৯৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও রুপার মূল্য অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
স্বর্ণের এ মূল্য বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বলেন, করোনার কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে ইউএস ডলারের দরপতন হচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রমাগতভাবে স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশীয় বুলিয়ন মার্কেটেও স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।