সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে সংগঠনটির কনফারেন্স হলে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ।
সভায় ব্রুনাইয়ের রাষ্ট্রদূত হাজী হারিস বিন ওসমান বলেন, ‘ব্রুনাই ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ৩৯ বছরে পদার্পণ করেছে। বর্তমানে আমাদের মধ্যে ভালো বাণিজ্যিক সম্পর্কও রয়েছে। আমরা এ সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে চাই। আমরা দূতাবাসের মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে দিতে পারি। ব্রুনাইয়ে ব্যক্তি পর্যায়ে কোনো আয়কর দিতে হয় না এবং করপোরেট ট্যাক্স মাত্র ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ। এ সুযোগ বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরাও কাজে লাগাতে পারেন। ব্রুনাই প্রচুর পরিমাণ তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) রফতানি করে। বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের ব্যবসায়ীরা ব্রুনাই থেকে এলপিজি আমদানি করতে পারেন। বাংলাদেশের গ্যাস সেক্টরে কোনো সমস্যা থাকলে তা নিরসনের জন্য ব্রুনাইয়ের কাছ থেকে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা নিতে পারে।’ তিনি বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের ব্রুনাই সফর এবং বিদ্যমান বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়নে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
সভায় কসোভোর রাষ্ট্রদূত গোনার উরেয়া বলেন, ‘দুই বছর আগেও কসোভোর সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু গত বছর দুই দেশের মধ্যে ২১ দশমিক ২৩ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে। কসোভো একটি ল্যান্ড-লকড কান্ট্রি। কিন্তু বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য আমাদের ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। কসোভোর তরুণ জনসংখ্যার হার বর্তমানে ইউরোপের মধ্যে সর্বাধিক। এদিকে বর্তমানে বাংলাদেশেরও জনসংখ্যার বড় অংশ তরুণ। এ সুযোগ দু-দেশকেই গ্রহণ করতে হবে। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন।’
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহসভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ বলেন, ‘সিলেট বাংলাদেশের মধ্যে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি এলাকা। এ অঞ্চলটি চা উৎপাদনের জন্য সারা বিশ্বে বিখ্যাত। তাছাড়া শিল্প, পর্যটন, চিকিৎসা ও আইটি খাতে সিলেট সম্ভাবনাময়। সিলেটে পর্যাপ্ত তেল, গ্যাস ও শিল্প স্থাপনের প্রয়োজনীয় উপকরণ রয়েছে। সরকারও বিদেশী বিনিয়োকারীদের সর্বোচ্চ সুবিধা দিতে আগ্রহী।’
সরকারের দূরদর্শী সিদ্ধান্তে সিলেটে স্পেশাল ইকোনমিক জোন ও বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্ক স্থাপিত হয়েছে এবং সমগ্র বাংলাদেশে ১০০টি ইকোনমিক জোন স্থাপনের কাজ চলছে। তিনি এসব সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগের জন্য ব্রুনাই ও কসোভোর বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান।
সভায় সিলেটের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলে এলাহী মো. ফয়সল। এছাড়া সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বারের পরিচালক ফখর উস সালেহীন নাহিয়ান, লন্ডন টি এক্সচেঞ্জের মিছবাহ চৌধুরী ও শেখ অলিউর রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের পরিচালক আবু তাহের মো. শোয়েব, মো. হিজকিল গুলজার, আলীমুল এহছান চৌধুরী, কাজী মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক পরিচালক এমএস সেকিল চৌধুরী ও সিলেট চেম্বারের সদস্যরা।
অর্থসংবাদ/এসএম