মহামারীর আগে মেলবোর্নের সম্পত্তির জরিপকারী ড্রোন অপারেটর নিকোলাস কুম্বার সকাল ৯টার অফিস শুরুর সময়টি মেনে কাজ করছিলেন। তবে কভিড-১৯-এর সময়ে রিমোর্ট কাজে স্থানান্তরিত হওয়ার পর জরিপকারীরা আগে কাজ শেষ করার মাধ্যমে কুম্বার তার সন্তানদের আরো সময় কাটানোর সুযোগ পান। সম্প্রতি জেপি মরগান চেজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেমি ডিমন ও টেসলার ইলোন মাস্কের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিরা যখন কভিড-১৯-পরবর্তী এ সময়ে অফিসে ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন। তখন অস্ট্রেলিয়ান ইউনিয়নগুলো প্রধান ব্যাংকগুলোকে বাসা থেকে কাজ করার স্থায়ী নিয়মে পরিণত করার জন্য চাপ দিচ্ছে।
কয়েক দশকের মধ্যে দেশেটির সর্বনিম্ন বেকারত্বের হারের কারণে কমনওয়েলথ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়ার কর্মচারীরা তাদের মামলাটি শিল্প ট্রাইব্যুনালে কাছে নিয়েছে। যেখানে তারা অর্ধেক সময় অফিস থেকে কাজ করার নির্দেশের বিরোধিতা করছে। চলমান বিতর্কটি বাসা থেকে কাজ করা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ানরা কীভাবে কাজ ও জীবনের মধ্যে ভারসাম্যকে দেখেন তা তুলে ধরে। যদিও কিছু নিয়োগ কর্তা অফিসে ফিরে আসার ওপর জোর দিচ্ছেন। অন্যদিকে অনেক কর্মচারী একটি মধ্যবর্তী পথ খুঁজছেন। তারা সপ্তাহে অত্যন্ত দুদিন বাসা থেকে কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। বাসা থেকে কাজ করার বর্তমান এ প্রবণতার প্রভাব অফিসের কার্যক্রম ছাড়াও অফিস বিল্ডিংয়ের মালিকদের ব্যবসায়িক মডেল ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। কারণ অফিস খালি পড়ে থাকার হার বহুমাত্রায় বেড়েছে কয়েক বছর ধরে। তবু ড্রোন অপারেটর নিকোলাস কুম্বারের মতো যারা বাসা থেকে কাজ করার পক্ষে তারা এ মাধ্যমে সুবিধা দেখছেন। যেমন স্থিতিশীল সময়ে কাজের ব্যবস্থাপনা তাদের স্ত্রী-সন্তানদের অসুস্থ থাকাকালীন কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়।
বাসা থেকে কাজ করার অধিকার নিয়ে এ লড়াই অস্ট্রেলিয়ার মানুষসহ বিশ্বব্যাপী মানুষের অনুভূতির প্রতিফলন দেখায়। বিভিন্ন দেশ ও শিল্পের কর্মীরা বাসা থেকে কাজ করার দাবি জানিয়েছে। বিপরীতে নিয়োগ কর্তাদের কাছ থেকে অফিসে ফিরে আসার আহ্বান এক প্রকার টানাপড়েন সৃষ্টি করেছে। বাসা থেকে কাজ করার পক্ষে নিয়োগ কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের প্রাথমিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও এখন বিপরীতমুখী দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছে, যা অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য দেশের কর্মব্যবস্থায় ভবিষ্যৎকে ঠিক করবে।
অর্থসংবাদ/এসএম