উন্নয়নশীল দেশে ভূমিকা রাখবে ব্রিকসের ব্যাংক

উন্নয়নশীল দেশে ভূমিকা রাখবে ব্রিকসের ব্যাংক

বৈশ্বিক অর্থনীতি নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। উন্নত দেশগুলোয় সুদহার বাড়ানো থেকে ভূরাজনৈতিক টানাপড়েনে বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে সরবরাহ চেইন। ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি) বিশ্বের উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং প্রবৃদ্ধির নিশ্চয়তা দিতে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।


সাংহাই ইনস্টিটিউটস ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের প্রধান চেন তঙশিয়াউ দাবি করেছেন, আন্তর্জাতিক মহলে অতিসরলীকরণ ও বৈপরীত্যপূর্ণ প্রবণতা বৈশ্বিক সহযোগিতা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করে। এনডিবির মতো বহুজাতিক আর্থিকপ্রতিষ্ঠানগুলো এক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। উন্নয়নশীল দেশগুলোয় ছড়িয়ে দিতে পারে নিজের কার্যক্রম।


ফুদান ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক চু জেইজিন জানিয়েছেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বহুজাতিক ব্যাংকগুলো আগামী দিনগুলোয় উন্নয়নশীল দেশের স্বার্থজনিত সমস্যার সমাধানে কাজ করে থাকে। তবে এনডিবির স্বাতন্ত্র্য ঠিক অন্য জায়গায়। এনডিবি উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশের সঙ্গে অন্য কোনো উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারে।


আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এ সময় ভঙ্গুর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। উদীয়মান বাজারে এনডিবি সাহায্য করতে পারে। অবদান রাখতে সক্ষম উন্নয়নশীল দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও টেকসই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে। স্থানীয় মুদ্রায় বিনিয়োগ ও অর্থায়ন করাই এনডিবির প্রধান লক্ষ্যমাত্রা। আর এ লক্ষ্যমাত্রা টেকসই উন্নয়নের দিকে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দেবে।


সিআইটিআইসি সিকিউরিটিজের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইয়াং ফেন বিশ্বাস করেন, সনাতন বহুজাতিক ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে সফল হয়নি। কারণ তাদের নীতিমালা ও সিদ্ধান্তগুলো অধিকাংশ সময়ই ডলারকে কেন্দ্র করে গৃহীত হয়। ব্রিকসের মৈত্রীর স্মারক হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এনডিবি। স্থানীয় মুদ্রার সম্প্রসারণ করে অল্প সময়ের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ককে প্রসারিত করতে পারে। সদস্য দেশগুলোর মধ্যকার অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও অগ্রগতির নিশ্চয়তা দেবে। এনডিবির প্রধান দিলমা রুসেফ বলেছেন, ‘‌বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা হুমকির মুখে পড়েছে ডলারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের কারণে। যুক্তরাষ্ট্রে মাত্রাতিরিক্ত সুদহার বৃদ্ধি ও ঋণসীমার পরিবর্তন প্রভাবিত করেছে বৈশ্বিক অর্থনীতিকেও।’


উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জন্য পরিস্থিতি কিছুটা জটিল। কারণ এর মধ্যেই তাদের মধ্যে অর্থনৈতিক সংকট গভীর। তাদের মুদ্রাও পরিবর্তনীয় নেই। কিন্তু এত কিছুর পরও তাদের বিনিয়োগ দরকার অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে গেলে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে শুরু করে ডিজিটাল নেটওয়ার্ক স্থাপন দেশগুলোর জন্য কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দিতে পারে। স্থানীয় বাজার গতিশীল ও মানুষের জীবন মান উন্নত হতে পারে। এনডিবির লক্ষ্যমাত্রা হলো সদস্য দেশগুলোর মধ্যে স্থানীয় মুদ্রাকে অগ্রাধিকার দেয়া। মার্কিন ডলারের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নয়, তার চেয়ে বরং স্থানীয় উন্নয়নকে ডলারকেন্দ্রিক প্রতিবন্ধকতা থেকে মুক্ত করা। ডলারের আধিপত্য থেকে বের হওয়ার প্রবণতা এখন বিশ্বজুড়েই। পৃথিবী এখন আর এককেন্দ্রিক অর্থনীতিতে আবদ্ধ থাকার প্রবণতায় নেই। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে এনডিবির স্থানীয় মুদ্রার অর্থায়ন ছিল ২১ দশমিক ৫ শতাংশ। ব্যাংকের ২০২২-২৬ কৌশলপত্র অনুসারে, ব্যাংকের মোট অর্থায়নের ৩০ শতাংশই হবে সদস্য দেশগুলোর মুদ্রায়।


ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার মাধ্যমে ২০১৫ সালে যাত্রা করে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। ব্রিকসের সদস্যদেশ বাদেও উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশ নিয়ে কাজ করছে ব্যাংকটি।


অর্থসংবাদ/এসএম

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া