দেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার সম্ভাবনাময় খাত ভৈরবের পাদুকা শিল্প

দেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার সম্ভাবনাময় খাত ভৈরবের পাদুকা শিল্প

ভৈরব পৌরসভা ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার অন্তর্গত একটি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা। এটি ঢাকা বিভাগের পূর্ব দিকের সর্বশেষ পৌরসভা। দেশের প্রধান তিনটি নদী বন্দরের অন্যতম ভৈরব বাজার নদী বন্দরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত ভৈরব বাজার নদী বন্দর এখনকার অর্থনীতির মূল চালকাশক্তি। এখান থেকে নদী পথে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ হয় দেশের বেশ কয়েকটা জেলায়। এছাড়া রেলওয়ে জংশন এবং দেশের পূর্বাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হওয়ায় ভৈরবের অর্থনীতি মুলত ব্যবসা-বাণিজ্য নির্ভর। এখানকার প্রধান প্রধান ব্যবসা ক্ষেত্র গুলোর মধ্যে অন্যতম পাদুকা খাত, বিভিন্ন শস্যের আড়ৎ, কয়লা শিল্প, কাপড়ের ব্যবসা, মাছের আড়ৎ ইত্যাদি। এই পাদুকা খাতকে ডিজিটালাইজ করতে তৈরি হয়েছে একটি ই-ডিরেক্টরি।


পাদুকা খাত ভৈরবের প্রধান ও বৃহত্তম শিল্প খাত | রাজধানী ঢাকার সাভারের পর দেশের সবচেয়ে বেশি জুতা তৈরী হয় ভৈরব শহরে। ছোট বড়সহ এখানে জুতার কারখানা রয়েছে অন্তত ৮ হাজার। এছাড়াও পাদুকার বিপণন ও কাঁচামাল সরবরাহের জন্য আরও প্রায় ৫ হাজার প্রতিষ্ঠান ভৈরবে ব্যবসা করছে। এখানকার কারখানাগুলো থেকে দেশের অনেক নামীদামী ও শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড সমুহ জুতা প্রস্তুত ও সংগ্রহ করে থাকে। বৃহৎ এই এই শিল্পকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু জুতার পাইকারী মার্কেট। যেখানে কয়েক শত পাইকারি জুতার দোকান রয়েছে। এসব দোকান থেকে জুতা সারা দেশের বাজারে সরবরাহ হয়। এছাড়া এখানকার অনেক কারখানা মালিক এবং ব্যবসায়ীগণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জুতা রপ্তানি করে থাকে। বর্তমানে বৃহৎ এই খাতে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়। পৌরসভা এই খাতের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। ২০২৩ সালে ভৈরবের প্রথম পাদুকা শিল্প মেলার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও পৌরসভা এই খাতের ডিজিটাইজেশন ও শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে।


ভৈরব পৌরসভা তার সময়োপযোগী উন্নয়ন চাহিদা ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রবণতা কথা বিবেচনা করে নানা রকম ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পাদুকা খাতকে আধুনিক আর ডিজিটালাইজ করা। মূলত স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করাই পৌরসভার প্রধান লক্ষ্য। ভৈরবের অনেক জুতা তৈরির কারখানা গুলোতে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে চীনার আধুনিক মেশিন। যাতে করে উৎপাদন যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে পণ্যের গুনগত মান। স্থানীয় সরকার নানাভাবে পাদুকা শিল্পের প্রসারের জন্য সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছে।


ইনফোরমেশন টেকনোলজি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে একটি আধুনিক ই-ডিরেক্টরি। এই প্রকল্পটি অর্থায়নে আছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও সুইজারল্যান্ড। প্রকল্পটি যৌথ উদ্যোগে আছেন ভৈরব পৌরসভা, ভৈরব পাদুকা কারখানা মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেড, প্রবৃদ্ধি- স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সুইসকন্ট্যাক্ট ও বিটনিক টেকনোলজি।


এখানে ভৈরবের জুতার দোকান এবং কারখানা গুলোর তথ্য, জুতার ধরন ও ছবিসহ বর্ণনা দেয়া আছে। এর মাধ্যমে ক্রেতারা যেমন সকল দোকানের পণ্য আর লোকেশন এক জায়গা থেকে পাচ্ছে ঠিক তেমনি বিক্রেতাগণ বিশ্বের সকল প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে তার পণ্যের বিবরণী। এতে সময় আর অর্থ দুটোই সেভ হচ্ছে। এছাড়া এই ওয়েবসাইটে রয়েছে জুতা শিল্প সম্পর্কিত নানা খবর আর ব্লগ। সাথে আছে সর্বশেষ অনুষ্ঠান অথবা কর্মসূচির ছবি। বিক্রেতাগণ খুব সহজেই তাদের নতুন তৈরি পণ্য গুলো আপলোড করতে পারেন এই ই-ডিরেক্টরিতে। পাদুকা এই ই-ডিরেক্টরির সুবিধা ভোগ করা শুরু করে দিয়েছে সাধারণ মানুষ এখনি। দেশের নানা প্রান্ত থেকে জুতার অর্ডার আসছে। এমনকি সুদূর ওমান থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে জুতার সম্পর্কে জানার জন্য।


ভৈরব পৌরসভার অভ্যন্তরে বসবাসরত নাগরিকদের কল্যাণে সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে। এসব কাজের মাধ্যমে পৌরসভা জনগণের ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে।


ভৈরবের মেয়র মনে করেন, ভৈরব পৌরসভার পাদুকা শিল্পের আধুনিকায়নের মত উপর্যুক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ভৈরব একটি আধুনিক যুগোপযোগী শহর হিসেবে বাংলাদেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবে।


অর্থসংবাদ/এসএম

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পোশাকখাতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে, কমে গেছে চাহিদা
২০২৩ সালে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ
২০২৩ সালে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ১০ শতাংশ
ইভ্যালিতে বড় অফার আজ, ১০ টাকায় মিলবে পাঞ্জাবি
হিলিতে আদা-সবজিতে স্বস্তি, বাড়তি দামে রসুন
বাংলাদেশে বিনিয়োগের ঐক্যমতে শেষ হলো গ্লোবাল বিজনেস কনফারেন্স
১১ মাসে ৪৩ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি
২০২৪ সালে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর
আইসিএবির নতুন সভাপতি ফোরকান উদ্দীণ
বিসিক শিল্পনগরীতে এক হাজার ৯৮ প্লট খালি