কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংখ্যা ৬০টি। এর মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম করে আটটি ব্যাংক। এছাড়া ৯টি প্রচলিত (কনভেনশনাল) ব্যাংকের ১৯টি শাখা এবং ১২টি প্রচলিত ব্যাংকের ১৫৫টি ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডো রয়েছে। এর বাইরে দেশের সব ব্যাংক ও শাখা প্রচলিত ধারার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৯১ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা, যা দেশের ব্যাংক খাতের মোট আমানতের প্রায় ২৫ শতাংশ। বর্তমানে ব্যাংক খাতের মোট আমানতের পরিমাণ ১১ লাখ ৮০ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা।
তথ্যমতে, আমানত সংগ্রহের দিক থেকে সবার শীর্ষে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর মোট আমানতের ৩৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ সংগ্রহ করেছে ব্যাংকটি। এর পরই রয়েছে ক্রমান্বয়ে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক লিমিটেড।
একইভাবে ইসলামী ব্যাংকিংয়ে বিনিয়োগের পরিমাণও বেড়েছে। গত জুন পর্যন্ত দেশের ব্যাংক খাতের মোট ঋণের স্থিতি ছিল ১১ লাখ ৬৩৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ের বিনিয়োগ দুই লাখ ৭৫ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা, যা মোট বিনিয়োগের ২৫ শতাংশ।
রেমিট্যান্স আহরণেও শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো বড় ভূমিকা রাখছে। আলোচ্য সময়ে এ ধারার ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৭ শতাংশের রেমিট্যান্স এসেছে। এপ্রিল থেকে জুন সময়ের মধ্যে ১০ হাজার ৩২৪ কোটি টাকার রেমিট্যান্স সংগ্রহ করেছে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো। বিপরীতে পুরো ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে এ তিন মাসে ৩৭ হাজার ৬২৯ কোটি টাকার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। কৃষি ঋণের ক্ষেত্রেও ভালো ভূমিকা রাখছে এ খাতের ব্যাংকগুলো।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মুসলিম দেশগুলোতে ইসলামিক ব্যাংকের ব্যাপক চাহিদা আছে। কোরআনের নিয়ম মেনে যারা ব্যবসা-বাণিজ্য ও লেনদেন করতে চান তারা সাধারণত ইসলামিক ব্যাংকগুলোতে লেনদেন করেন। দেশের ৯০ ভাগ ব্যাংক গ্রাহক মুসলমান। এ কারণেই দেশের ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের পরিধি দিন দিন বাড়ছে।
১৯৮৩ সাল থেকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে দেশে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন তৈরি করে।