খেলাপী ঋন আদায়ে ব্যর্থ অগ্রণী ব্যাংক!

খেলাপী ঋন আদায়ে ব্যর্থ অগ্রণী ব্যাংক!
ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋন ক্রমেই বাড়ছে। খেলাপী ঋন আদায়ে ব্যার্থ  হচ্ছে অগ্রণী ব্যাংক। অগ্রণী ব্যাংকের বেশিরভাগ ঋনের অর্থই আটকে আছে টেক্সটাইল খাতের ৯ টি প্রতিষ্ঠানের কাছে। দীর্ঘ  সময়েও  আদায় হয়নি এসব ঋনের অর্থ ।বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী ব্যাংকটির মোট খেলাপির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এখন ১৩ টি প্রতিষ্ঠানের কাছে। যার পরিমাণ ১ হাজার ১৭৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে টেক্সটাইল খাতের নয়টি কোম্পানির কাছে আটকে আছে ৭৫৬ কোটি ৯৪ লাখ এবং বাকি ৪ টির কাছে ৪৩২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।

টেক্সটাইল খাতের খেলাপিদের মধ্যে রয়েছে এম আর সোয়েটার কম্পোজিট লিমিটেড। চলতি বছরের আগস্ট শেষে কোম্পানিটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। ২০১৭ সাল থেকে ঋণটি মন্দ মানের খেলাপির খাতায়। ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে দশ বছর মেয়াদে পুনঃতফসিলের জন্য ব্যাংকের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হলেও প্রয়োজনীয় ডাউন পেমেন্ট দিতে রাজি হয়নি প্রতিষ্ঠানটি। এ কারণে এখনও পুনঃ তফসিলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি অগ্রণী ব্যাংক।

একই অবস্থা জুলিয়া সোয়েটার কম্পোজিট লিমিটেডের। ঋণ পুনঃতফসিলে জন্য পর্যাপ্ত ডাউন পেমেন্ট দিতে রাজি হয়নি জুলিয়া কম্পোজিট। এর ফলে ২০১৭ সাল থেকে ৯৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা খেলাপিতে পরিণত হয়ে আছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন সুস্পষ্ট ইচ্ছাকৃত খেলাপির লক্ষ্যণ। দ্রুত এসব গ্রাহকদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।

অগ্রণী ব্যাংকে খেলাপি হওয়া টেক্সটাইল খাতের অন্য কোম্পানি গুলো হল- শেয়ােরবাজারে তালিকাভুক্ত প্যাসিফিক ডেনিম, ওয়েস্টেরিয়া টেক্সটাইল লিমিটেড, সাত্তার টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, নাবিল টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, যীল টেক্সটাইল লিমিটেড, মিলন টেক্সটাইল কম্পোজিট লিমিটেড এবং জয় কম্পোজিট প্রোডাক্ট লিমিটেড। শীর্ষ ১৩ খেলাপির মধ্যে বাকি চারটি প্রতিষ্ঠান হল- আর্থ এগ্রো ফার্ম লিমিটেড, পাটোয়ারী পটেটো ফ্ল্যাক্স, আর কে গ্রিনল্যান্ডলিমিটেড, এবং মেসার্স ফেরদৌস জুট মিলস লিমিটেড।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের জুন শেষে অগ্রণী ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছয় হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। এরমধ্যে মন্দ মানের খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৫ হাজার ৪৮১ কোটি। যা মোট খেলাপির প্রায় ৮৬ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত শীর্ষ ২০ খেলাপি থেকে ২০০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল অগ্রণী ব্যাংকের। কিন্তু আদায় হয়েছে মাত্র ৬ কোটি ৫৫ লাখ। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। অন্যান্য খেলাপিদের থেকে একই সময়ে ৪০০ কোটি টাকা নগদ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও নির্ধারিত ৬ মাস শেষে আদায় হয়েছে মাত্র ৬৮ কোটি। যা নির্ধারিত ক্যাশ রিকভারির ১৭ শতাংশ। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত নতুন করে ৪ হাজার ৪২০ কোটি টাকা ঋণ অবলোপন করেছে ব্যাংকটি।

এ বিষয়ে জানতে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সিইও) মোহম্মদ শামস্ উল ইসলামকে ফোনে যোগাযোগের চেষ্ঠা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে এসব বিষয়ে অগ্রণী ব্যাংকের কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

বিদেশি ডেবিট কার্ডে অর্থ তোলা বন্ধ করল ইবিএল
এসবিএসি ব্যাংকের নতুন এএমডি নূরুল আজীম
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
বিকাশের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা মাহফুজ মারা গেছেন
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পর্ষদের ৩ কমিটি গঠন
ব্যাংকে চাকরির আবেদনের বয়সসীমা শিথিল
মাসিক সঞ্চয় হিসাব খোলা যাচ্ছে বিকাশ অ্যাপে
ফের এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন
অফিসার পদে ৭৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে সরকারি ৫ ব্যাংক
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পরিচালক হলেন যারা