দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ‘জাকরাফন্থ থোম্মা’ নামে ওই জুনিয়র অফিসার সেনা ছাউনি থেকে বন্দুক ও বিস্ফোরক চুরি করার সময় নিজের কমান্ডিং অফিসারকে গুলি করে হত্যা করেন। পরে বৌদ্ধ মন্দির ও স্থানীয় একটি শপিং মলে হামলা চালান।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে ওই সেনাসদস্য রাজধানী ব্যাংককের উত্তর-পূর্বে কোরাট শহরের রাচাসিমা এলাকায় হঠাৎ এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করলে অন্তত ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। আহত হন আরও অন্তত ৫৭ জন।
হামলা চালানোর আগে সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি চুরি করেন থোম্মা। পরে সেই গাড়ি নিয়ে রাচাসিমায় পৌঁছে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করেন তিনি। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ছবি এবং ভিডিওতে আতঙ্কিত লোকজনকে প্রাণ বাঁচাতে ঘটনাস্থল থেকে চারদিকে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।
স্থানীয় মিডিয়া ফুটেজে দেখা গেছে, সন্দেহভাজন হামলাকারী মুয়াং জেলার টার্মিনাল ২১ শপিং সেন্টারের সামনে গাড়ি থেকে নামছেন এবং এলোপাতাড়ি গুলি চালাচ্ছেন। এসময় আশেপাশের লোকজন প্রাণ বাঁচাতে পালাতে থাকে।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রক্তে ভেসে যাওয়া গাড়ির চাকার ওপর পড়ে যাচ্ছেন একজন। আরেকটি ভিডিওতে গুলিবিদ্ধ চারজনকে দেখা গেছে, যাদের কোনো সাড়া নেই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা বিপণীবিতনের ভেতরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে বন্দুকধারীকে কালো পোশাক পরিহিত এবং কাঁধের ওপর বন্দুক উঁচু করে ধরে রাখতে দেখা গেছে। তার আশপাশে আর কারও উপস্থিতি দেখা যায়নি।
অন্যান্য ফুটেজে ভবনটির বাইরে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। গুলি লেগে বিস্ফোরিত একটি গ্যাস ক্যানিস্টার থেকে এ আগুনের সূত্রপাত হয় বলে কয়েকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় হামলাকারীর পোস্ট করা কয়েকটি ছবির একটি তার সেলফি, সেখানে তার পেছনে এই আগুনের কুণ্ডলী দেখা গেছে।
স্থানীয় পুলিশের ভাষ্যমতে, জাকরাফন্থ থোম্মা প্রথমে শহরের একটি বাড়িতে ঢুকে দুজনকে গুলি করে হত্যা করেন। এরপর তিনি যান সেনা ঘাঁটিতে, সেখানকার অস্ত্রাগার থেকে বন্দুক নিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালান। তার গুলির মুখে পড়েছে পথচারী, বিপনীবিতানে কেনাকাটা করতে যাওয়া নারী-পুরুষ।
হামলার সময় সন্দেহভাজন তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টগুলোয় পোস্ট দিতে থাকেন। একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘সবার জন্যই মৃত্যু অবশ্যাম্ভাবী।’ এরমধ্যে ফেসবুকের একটি পোস্টে তিনি জানতে চান যে তার আত্মসমর্পণ করা উচিত কি না। হামলা চালানোর আগে তিনটি বুলেটসহ একটি পিস্তলের ছবি পোস্ট করেন এবং ওই ছবির ওপরে লেখেন- ‘এটি উত্তেজিত হওয়ার সময়।’
হামলার পর ওই সেনাসদস্য আত্মগোপন করেন। তাকে ধরতে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় বিপনীবিতানটি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। রোববার সকালে মৃতের সংখ্যা ২০ জন বলে জানানো হয়।