গতকাল ঢাকার এসএমই ফাউন্ডেশনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব কথা বলা হয়। ইআরএফের সদস্যদের জন্য আয়োজিত ‘কন্ট্রিবিউশন অব এসএমই,স ফর দ্য ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অব বাংলাদেশ: শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এ পোস্ট-কোভিড-১৯ পারসপেকটিভ’ শীর্ষক এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন।
শিল্পমন্ত্রী করোনার ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক পরিস্থিতি হতে এসএমই খাতের উত্তরণে ইআরএফকে শক্তিশালী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পায়নের যে ধারা তৈরি হয়েছে, সেটির সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে শিল্প খাতের উন্নয়নে সরকার কাজ করছে। বৈশ্বিক অর্থনীতির এ ধরনের অপ্রত্যাশিত দুরবস্থার মধ্যেও বাংলাদেশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক ধারা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে যেখানে শিল্পোন্নত দেশগুলোয় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশ ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জিডিপি এবং বৈশ্বিক গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধির চেয়ে বেশি।
তৃণমূল পর্যায়ের এসএমই উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে রাজধানীর পূর্বাচলে একটি স্থায়ী সেলস অ্যান্ড ডিসপ্লে সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, এখানে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পণ্য বিক্রয়, প্রদর্শন এবং বাজারজাতকরণের জন্য সব ধরনের সুবিধা গড়ে তোলা হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি শামস মাহমুদ এবং সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম, ইআরএফের সভাপতি শারমীন রিনভী ও সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম বক্তব্য দেন।
ড. আতিউর রহমান বলেন, বাজারে পণ্যের চাহিদা যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য সাধারণ মানুষের হাতে আরো অর্থ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য এসএমই খাতের জন্য প্রণোদনা আরো বৃদ্ধির প্রস্তাব করেন তিনি।
ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সারভাইভাল এসএমইগুলোকে কমার্শিয়াল ভায়াবেল এসএমইতে পরিণত করতে হবে। বড় শিল্প খাতকে শক্তিশালী করতে সংশ্লিষ্ট এসএমই খাত বিকশিত করার কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর ফলে একটি শক্তিশালী সাপ্লাই চেইন গড়ে উঠবে।
ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, এসএমই খাতে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে সে অনুপাতে নারী উদ্যোক্তারা প্রয়োজনীয় ঋণসহায়তা পাচ্ছেন না।
ড. মো. মাসুদুর রহমান এসএমই খাতের জন্য নীতিসহায়তা আরো জোরদার করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আসন্ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে এসএমই খাতকে টিকে থাকতে হলে এ খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।
অর্থসংবাদ/এসএ