বিশ্বের শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ হচ্ছে চীন । বিশ্বজুড়ে অপরিশোধিত ইস্পাতের অর্ধেকের বেশি চীনের কারখানাগুলোয় উৎপাদন হয়। সিআইএসএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসে চীনের কারখানাগুলোয় সব মিলিয়ে ৯৬ কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজার টন অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে দেশটিতে শিল্প ধাতুটির উৎপাদন ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
চলতি বছের সর্বশেষ নভেম্বরে চীনের কারখানাগুলোয় সব মিলিয়ে ৮ কোটি ৭৬ লাখ ৬০ হাজার টন অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে সিআইএসএ, যা আগের মাসের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি। এ সময় দেশটিতে অপরিশোধিত ইস্পাতের দৈনিক গড় উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ২৯ লাখ ২০ হাজার টনে।
দেশটির প্রত্যাশা, চলতি বছর চীনে অপরিশোধিত ইস্পাতের বার্ষিক উৎপাদন ১০০ কোটি টনের মাইলফলক ছাড়িয়ে যেতে পারে। এর মধ্য দিয়ে চীনের ইস্পাত উৎপাদনে ৩-৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ডব্লিউএসএ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে চীনের কারখানাগুলোয় সব মিলিয়ে ৯৯ লাখ ৬৩ হাজার টন অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন হয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে শিল্প ধাতুটির বৈশ্বিক উৎপাদনের ৫৩ দশমিক ৩ শতাংশ নিজেদের দখলে রেখেছিল চীন।
সাম্প্রতিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০২০ সাল শেষে চীনের কারখানাগুলোয় অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদনের সম্মিলিত পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১০৪ কোটি ৫০ লাখ টনে। আগামী বছর দেশটিতে শিল্প ধাতুটির উৎপাদন আরো বেড়ে ১০৬ কোটি ৮০ লাখ টনে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ চীনের ইস্পাত উৎপাদন শিল্পে করোনাভাইরাসের প্রত্যক্ষ কোনো প্রভাব পড়ছে না।
চলতি বছর চীনের ইস্পাত রফতানিকেও চাঙ্গা রাখতে পারে। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্ল্যাটসের সাম্প্রতিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০২০ সাল শেষে চীন থেকে ইস্পাত রফতানির পরিমাণ ৫ কোটি ৪০ লাখ থেকে ৫ কোটি ৫০ লাখ টনের মধ্যে থাকতে পারে। ২০২১ সালে চীনের ইস্পাত রফতানি আরো বেড়ে ৬ কোটি ৫০ লাখ থেকে ৭ কোটি ৫০ লাখ টনে উন্নীত হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা আছে।
প্রতিবেদনে জানিয়েছে সিআইএসএ, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। শুধু নভেম্বরে দেশটিতে ব্যবহারিক ধাতুটির উৎপাদনে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ৭ কোটি ২০ লাখ ১০ হাজার টন পিগ আয়রন।
করোনাভাইরাস চীনের উহান থেকে পুরো বিশ্বে ছড়িয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই করোনার বিরুদ্ধে প্রথম লড়াই শুরু করেছিল চীন। বছরের শুরুর দিকে দীর্ঘদিন কঠোর লকডাউনে ছিল দেশটি। ওই সময় চীনের ইস্পাত কারখানাগুলোর কার্যক্রম অনেকটা শ্লথ হয়ে এসেছিল। তবে লকডাউন উঠে যাওয়ার পর পরই দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়েছে চীনের ইস্পাত উৎপাদন শিল্প।