এর আগে গত রোববার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে শেষে পেঁয়াজ আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করার অনুরোধ জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
পেঁয়াজ রফতানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরই দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করে। তাই কৃষককে বাঁচাতে পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক আরোপ করলো সরকার বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে সাড়ে তিন মাস বন্ধ রাখার পর নতুন বছরের শুরুতে আবার পেঁয়াজ রফতানির অনুমতি দিয়েছে ভারত। অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্য বৃদ্ধি ও মজুদে ঘাটতির কারণে গত ১৪ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল দেশটি। এই পরিস্থিতিতে ২০১৯ সালের মত গতবছরও মিয়ানমার, পাকিস্তান, চীন, মিশর, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করে সরকার। পাশাপাশি ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয় এনবিআর।
ভারত পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার পর গত এক মাসের ব্যবধানে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদন অনুযায়ী রাজধানীর খুচরা বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। একমাস আগে যা ছিলো ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকায়; যা এক মাস আগে ছিলো ২৫ থেকে ৩৫ টাকা।
এদিকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে ফের শুল্ক আরোপের বিষয়ে গত রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, শুল্ক আরোপে করা হবে কিনা সে বিষয়ে কৃষক ও ভোক্তাদের স্বার্থ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। দেশে বর্তমানে পেঁয়াজের সংকট নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যদি দেখি ভারতের পেঁয়াজ ৩৯ টাকায় ঢুকছে, সেটাতে আমাদের জন্য আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। ভারত আজকে পেঁয়াজ ছেড়েছে। বর্ডারে ভারত থেকে পেঁয়াজ ঢুকছে ৩৯ টাকা দরে। আর ঢাকার বাজারে সে পেঁয়াজ পাইকারিতে ৪৫ টাকা, আর খুচরা বাজারে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখার কোনো সিদ্ধান্ত আছে কিনা জানতে চাইলে টিপু মুনশি বলেন, বন্ধ করা, খোলা তাদের সিদ্ধান্ত। এক সময় তো পয়সা খরচ করে এলসি ওপেন করেছিল। আমরা বন্ধ করতে চাই না। ডিউটি স্ট্রাকচার এভাবে করতে চাই যাতে ওখান থেকে আনতে গিয়ে লাভজনক না হয়। কোনো অবস্থাতেই যাতে উত্পাদকরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়৷ কারণ তাদের সাপোর্ট না দিলে সামনের দিনগুলোতে আমাদের আরও খারাপ অবস্থা হবে।
আগামী মার্চ মাসে যে পেঁয়াজ আসবে সে পর্যন্ত কোনো সমস্যা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ধারণা পেঁয়াজ উত্পাদনে খরচ পড়ে ১৮ টাকা৷ সেটা যদি কৃষকরা ২৫ টাকায় বিক্রি করতে না পারে তাহলে তারা উত্সাহ হারিয়ে ফেলবে। আর সে পেঁয়াজ ঢাকা পর্যন্ত আসতে ৪০ টাকায় ভোক্তারা পাবে।