মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ জানিয়েছে, মার্চে বাণিজ্য ঘাটতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ৭ হাজার ৪৪০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বোচ্চ বাণিজ্য ঘাটতির রেকর্ড। সরবরাহ চেইনে বাধার কারণে তীব্র চাহিদা মেটাতে সক্ষমতার ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছেন উৎপাদনকারীরা। মজুদগুলোও খুব দুর্বল। আর মহামারীর প্রভাব থেকে মুক্ত করতে পরিবার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে সরকারের দেয়া বিপুল পরিমাণ প্রণোদনা এবং স্বাস্থ্য সংকট পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় দেশটিতে ব্যাপকভাবে চাহিদা বেড়েছে।
মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ২৭ হাজার ৪৫০ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল। এর মধ্যে পণ্য আমদানি ৭ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ২৩ হাজার ৪৪০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। খাদ্য ও খাদ্যপণ্য আমদানির এ রেকর্ডও সর্বকালের সর্বোচ্চ। দেশটি পোশাক, আসবাব, খেলনা, চিপ, মোটরযান, পেট্রোলিয়াম পণ্য, টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছিল। তবে বেসামরিক উড়োজাহাজ ও সেলফোনগুলোর আমদানি হ্রাস পেয়েছিল।
মহামারী থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে গত এক বছরে সরকার প্রায় ৬ ট্রিলিয়ন ডলার প্রণোদনা দিয়েছে। ১৬ বছরের বেশি বয়সী মার্কিন নাগরিকদের বর্তমানে কভিড-১৯ টিকার আওতায় আনা হয়েছে। ফলে মহামারী চলাকালীন পরিষেবাগুলোর চাহিদা বর্তমানে পণ্যগুলোয় স্থানান্তরিত হয়েছে। ফেডারেল রিজার্ভের অতিসহজ মুদ্রানীতি অবস্থানের ফলে অর্থনৈতিক গতিও বাড়ছে।
মার্চে বেশির ভাগ আমদানি হয়েছিল চীন থেকে। ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ে চলা শুল্কযুদ্ধের অবসান ঘটার পর বেইজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ফেব্রুয়ারিতে ২ হাজার ৪৬২ কোটি ডলার থেকে মার্চে ২ হাজার ৭৬৯ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। নিউইয়র্কের সিটিগ্রুপের অর্থনীতিবিদ ভেরোনিকা ক্লার্ক বলেন, ২০১৯ সালে শুরু হওয়া শুল্কযুদ্ধের অবসান ঘটায় চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য প্রসারিত হয়েছে। এছাড়া মার্চে মেক্সিকো ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকেও রেকর্ড পরিমাণ আমদানি হয়েছিল।
মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের রফতানিও ত্বরান্বিত হয়েছিল। তবে তা আমদানির প্রবৃদ্ধির তুলনায় পিছিয়ে ছিল। এ সময়ে দেশটির মোট রফতানি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ২০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে। পাশাপাশি পণ্য রফতানি ৮ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ১৪ হাজার ২৯০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। এক্ষেত্রে রফতানির শীর্ষে ছিল শিল্প সরবরাহ, উপকরণ এবং মূলধন ও ভোক্তাপণ্য। সূত্র: ব্লুমবার্গ।