ধনীদের তালিকায় যাঁরা যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন মডার্নার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্টেফান ব্যানচেল ও বায়োএনটেকের সিইও উগুর সাহিন। দুজনের সম্পদ প্রায় ৪ বিলিয়ন বা ৪০০ কোটি ডলারের মতো। পিপলস ভ্যাকসিন অ্যালয়েন্সের সূত্রে সিএনএন এ খবর দিয়েছে।
এ ছাড়া কাগজে-কলমে চীনের ক্যানসিনো বায়োলজিকসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা এবং মডার্নার শুরুর দিকের বিনিয়োগকারীরাও ধনীদের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন। অংশত, কোভিড টিকা বিক্রি থেকে অর্জিত মুনাফার প্রত্যাশা এবং কোম্পানির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় তাঁদের এই সমৃদ্ধি।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর মডার্নার শেয়ারের দাম ৭০০ শতাংশ এবং বায়োএনটেকের শেয়ারের দাম ৬০০ শতাংশ বেড়েছে। ক্যানসিনো বায়োলজিকসের শেয়ারের দাম এই সময়ে ৪৪০ শতাংশ বেড়েছে।
অধিকারকর্মীরা বলছেন, মহামারির কারণে সমাজে যে বৈষম্য বেড়ে গেছে, নতুন ধনীদের তালিকা সেই কঠিন বাস্তবতা মনে করিয়ে দেয়। নতুন এই ধনীদের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ৯৩০ কোটি ডলার। এই অর্থ দিয়ে নিম্ন আয়ের দেশের ৭৮ কোটি মানুষকে ২ ডোজ টিকা দেওয়া সম্ভব।
এখন মূলত ধনী দেশগুলোর মানুষেরা টিকা পাচ্ছেন। অনেকটা কাজও হচ্ছে। কিন্তু গরিব দেশগুলো টিকা না পেলে বিশ্বের সিংহভাগ মানুষ অরক্ষিত থেকে যাবে। তাতে এই মহামারি আরও প্রলম্বিত হবে। ভাইরাসের নতুন রূপ সৃষ্টি হচ্ছে। টিকাদানে যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে, ততটুকু আবার হুমকির মুখে পড়তে পারে।
এই পরিস্থিতিতে সমাধান হচ্ছে জনগণের টিকা নিয়ে আসা—সবাই পাবে এবং সবার নাগালের মধ্যে থাকবে এমন টিকা। এখন টিকা প্রাপ্তি নিয়ে বৈষম্য বা একধরনের জাতিবিদ্বেষ তৈরি হচ্ছে, তা সমাধানের পথ করে দিতে পারে এই সর্বজনীন টিকা।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, কৃত্রিমভাবে টিকার স্বল্পতা তৈরি করা হয়েছে এবং এই পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব। মেধাসম্পদের দাবি না থাকলে সারা বিশ্ব একসঙ্গে এই টিকা উৎপাদন করতে পারবে। তাতে এ বছরের মধ্যেই বিশ্বের ৬০ ভাগ মানুষ এবং ২০২২ সালের মধ্যে যাঁরা চান, তাঁদের সবাইকে এই টিকা দেওয়া সম্ভব ছিল, এক হিসাবে দেখা গেছে।
কিন্তু টিকার মেধাস্বত্ব ছাড়ের ব্যাপারে ধনী দেশগুলো একমত হতে পারছে না। ট্রিপসের সব সদস্য একমত হলেই কেবল এই টিকার মেধাস্বত্ব প্রত্যাহার করা সম্ভব। তা না হওয়ায় টিকার বদৌলতে নতুন ধনীর সৃষ্টি হচ্ছে। বাড়ছে বৈষম্য।