ভারতীয় পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্রমাগত বাজারের পতনে কম দামে শেয়ার কেনার সুযোগ এসেছে। কিন্তু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে এই আশঙ্কায় বাজার থেকে কার্যত মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। সেই পরিস্থিতি থেকে কিছুটা ঘুরে শেয়ারে কেনার আগ্রহ বেড়েছে। তার সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবারই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ১.৭ লক্ষ কোটির আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। সবকিছুর যোগফলে তেজি শেয়ার বাজার। এই নিয়ে পর পর তিন দিন উত্থান মুম্বাই শেয়ার সূচক সেনসেক্স এবং ন্যাশনাল ফিফটি (নিফটি)-তে। আজ বৃহস্পতিবার সেনসেক্স বন্ধ হয়েছে ১৪১১ পয়েন্ট উপরে। নিফটির উত্থান ৩২৪ পয়েন্ট।
দেশটির প্রধান পুঁজিবাজারে মূলত ব্যাংকিং এবং বিশেষ করে প্রাইভেট ব্যাংক সেক্টরই বাজারে গতি এনেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এইচডিএফসি ব্যাংক, ইন্দাসইন্ড ব্যাংক, আরবিএল ব্যাংক, আইসিআইসিআই, বন্ধন, এসবিআই-সহ সব ব্যাংকের শেয়ারই ঊর্ধ্বমুখী। ব্যাংকিং ছাড়া ‘টপ গেনার’-এর তালিকায় লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো, বাজাজ ফাইনান্স, ভারতী এয়ারটেল, হিরো মোটোকপ, বাজাজ অটো, পাওয়ার গ্রিড, ভারতী এয়ারটেল, আইটিসি। অন্য দিকে তেজি বাজারেও পতনের মুখ দেখেছে গেইল, এইচসিএল টেক, সান ফার্মা, টাটা স্টিল, টেক মহিন্দা, জেএসডব্লিউ স্টিল, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, মারুতি সুজুকি, আদানি পোর্ট-এর মতো শেয়ার।
গতকালের তুলনায় কিছুটা উপরে উঠে বাজার লেনদেন শুরু হওয়ার পর এক সময় আগের দিনের চেয়েও নীচে চলে যায়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়িয়ে দ্রুতগতিতে উপরে উঠতে থাকে সেনসেক্স ও নিফটি। সেনসেক্সের সর্বোচ্চ উত্থান ১৫৬৪ পয়েন্ট। তবে দিনের শেষে বন্ধ হয়েছে ১৪১০.৯৯ পয়েন্ট বা ৫ শতাংশ উপরে উঠে। নিফটি সূচক সর্বোচ্চ ছুঁয়েছিল ৮৭৪৯। বাজার বন্ধ হয়েছে ৩২৪ পয়েন্ট (৩.৮৯%) উপরে। সূচক ৮৬৪১-এ।
মার্চ মাসে কার্যত টানা পতনের ফলে সেনসেক্স নেমে গিয়েছিল ২২ শতাংশ নীচে। সমান তালে নিফটিও পড়েছিল ২৩ শতাংশ। তার পর এই সপ্তাহ থেকেই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে বাজার। কম দামে শেয়ার কেনার এমন সুযোগ আর মিলবে না, এই আশায় ফের লগ্নি করতে শুরু করেন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। তার জেরে তেজিভাব ছিলই। বৃহস্পতিবার আবার করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় এ দিন ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন নির্মলা সীতারামন। ফলে আগামী কয়েক দিন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক আকার না নিলে এই তেজিভাব বজায় থাকতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।